ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমরাজ্যে কমলার আগমন, কমবে আমদানী নির্ভরতা

আব্দুর রব নাহিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
🕐 ১:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২০

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজ্য নামেই সবার কাছে পরিচিত, সেই রাজ্যে নতুন অতিথি হয়ে এসেছে কমলা। আমদানী নির্ভর ফলটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে জানান দিচ্ছে নিজের অবস্থান। কমলার বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে হলদে কমলা,এমন দৃশ্য আশাবাদী করেছে ফলগবেষক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের। তারা বলছেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই অনেকাংশেই কমবে ফল আমদানী নির্ভরতা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আমনুরা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়কের পাশে জামতলা এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন, মতিউর রহমান নামে এক কৃষি উদ্যোক্তা। মতিউর রহমানের কৃষি খামারের নাম মনামিনা।

খামার গড়ার বিষয়ে বলতে গিয়ে মতিউর রহমান বলছিলেন, একসময় বরেন্দ্র এলাকায় শুধু একবার ধান হত, তাও তা ছিলো বৃষ্টি নির্ভর অনেকটা, পরে যান্ত্রিক সেচ ব্যবস্থা চালু হলেও এতে করে পানির স্তর ক্রমাগত কমে যেতে লাগল। বিষয়টি ভেবে তিনি ফলবাগান গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় পেয়ারা, বানিজ্যিক ভিত্তিতে মাল্টা বাগান গড়ে তোলেন, মাল্টা বাগানের তার সাফল্য ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী। পেয়েছেন পুরস্কারও।

এবার মতিউর রহমানের বাগানে নতুন অতিথি কমলা। অষ্ট্রেলিয়া,চাইনা ও ম্যান্ডারিন জাতের ৫০০ চারা তিন বছর আগে লাগিয়েছিলেন মতিউর রহমান, এবছর তার কমলার গাছে পূর্ণ ফল এসেছে, গতবারও কিছু কিছু গাছে ফল এসেছিল। বর্তমানে কমলার বাগানটিতে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা কমলা যে কাউকেই প্রশান্তি এসে দেবে।

বর্তমানে মতিউরের কমলা বাগান থেকে প্রতিদিনই কমলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা ধরে। মতিউর রহমানের আশাবাদ এ বছর তিনি তার বাগান থেকে ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন। আগামী বছর তা গিয়ে ঠেকবে ২৫ লাখে, এমনই ধারনা এ কৃষি উদ্যোক্তার।

শুধু কমলার বাগানই গড়েনটি মতিউর রহমান, ইতিমধ্যেই কমলার চারা তৈরী ও বিক্রিও করছেন। তার কাছ থেকে চারা নিয়ে অনেকেই কমলা বাগান তৈরীতে উদ্যোগী হয়েছেন। আর এসব কাজের মাধ্যমে তিনি সৃষ্টি করেছেন অন্তত ২০ জনের কর্মসংস্থানও।

সম্প্রতি মতিউর রহমানের কমলা বাগান ঘুরে দেখেছেন কৃষি মন্ত্রনালয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষনা) কমলা রঞ্জন দাশের মতে, আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত, এখন এখানে কমলা ও মালটার বাগান গড়ে উঠছে। প্রতিবছর ফল আমদানীতে যে বিপুল পরিমান অর্থ আমাদের খরচ করতে হয়, তা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। আগামীতে ফল আমাদানী নির্ভরতা কাটিয়ে ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ আরো বেশি সক্ষম হবে।

আগামী দিন গুলোতে কমলাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে উঠলে,বছরব্যাপী ফলের প্রাপ্যতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি কমে আসবে আমদানী নির্ভরতা।

 
Electronic Paper