ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মৎস্য-কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
🕐 ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২০

রাজশাহীতে কৃষি ও মৎস্য খাতে চলতি বছরে ১৯৬ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি, বন্যা, জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় এই দুই খাত। পরে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাব পরে। ক্ষতি পোষাতে নানা উদ্যোগ চলছে। তবে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়লেও তেমন সহায়তা পাচ্ছেন না চাষিরা। যদিও যথাসাধ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও মৎস্য অফিস।

জানা গেছে, রাজশাহীতে বন্যার কারণে ১০৭ হেক্টর পুকুরের ২৬২ মেট্রিক টন মাছ ও ৩ লাখ পোনা ভেসে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষিতে উৎপাদিত প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসল। ফলে মৎস্য খাতে ১৪৬ কোটি টাকা ও কৃষি খাতে ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন রাজশাহীর কৃষকরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে রাজশাহীর কৃষি আবাদে ৫০ কোটি বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যা ও জলাবদ্ধতায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজশাহীর তানোর, মোহানপুর, বাগামারা, পুঠিয়া উপজেলার কৃষকরা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বন্যা ও জলাবদ্ধতায় রাজশাহীর তানোর, মোহনপুর ও বাগামারা উপজেলার ৬ হাজার ২১৬ জন কৃষকের আবাদ নষ্ট হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই তিন উপজেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তিন উপজেলায় ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছিল। যার মধ্যে মোট উৎপাদন থেকে ১ হাজার ৪৯৬ দশমিক ২৬ মেট্রিক টন উৎপাদন নষ্ট হয়েছে।

এছাড়া ২ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদের মধ্যে নষ্ট হয়েছে ৫ হেক্টর জমির সবজি। এর আগে ৩ উপজেলায় ২৭ দশমিক ৫৮ হেক্টর জমির রোপা ও আউশের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উৎপাদন কমেছিল ৮ হাজার ৫৮০ দশমিক ৫৬ মেট্রিক টন। রোপা আউশের আবাদে ৩০ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। আবাদ নষ্ট হয়ে সবজিতে ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, পান বরজে ৮ কোটি ৮২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও মরিচের আবাদে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছিল।

অন্যদিকে রাজশাহী মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রাজশাহীতে বন্যার কারণে ১০৭ হেক্টর পুকুরের ২৬২ মেট্রিক টন মাছ ও ৩ লাখ পোনা ভেসে গিয়ে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুকুরে অক্সিজেন স্বল্পতায় বিষক্রিয়া তৈরি হয়ে ১২ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মৎস্য চাষিরা। এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে কারণে ১৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা খোলা কাগজকে বলেন, চলতি বছর মাছ চাষিরা একের পর এক প্রতিকূলতায় অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এ নিয়ে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করেছে মৎস্য অফিস।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক খোলা কাগজকে বলেন, কৃষি অফিস সাধ্যমতে সহায়তা করেছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের। কৃষকদের ভাসমান রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করে ধান চাষিদের সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়াও বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

 
Electronic Paper