ধুনটের শতবর্ষী বউমেলা
ইমদাদুল হক ইমরান, ধুনট (বগুড়া)
🕐 ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২০
আবেগ এবং গভীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই মেলা। অনেক দিন ধরে যাদের সঙ্গে দেখা হয়নি, এ দিন তাদেরও দেখা মেলে। একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গাপূজাকে ঘিরে বসে একদিনের এই বউমেলা। বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া ইছামতি নদীর তীর হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। প্রতি বছরের মতো এবারও বউমেলা ছিল জমজমাট। সব বয়সীদের ভিড় ছিল দিনজুড়ে।
জানা যায়, প্রথম থেকেই নাকি এ মেলায় আসা মানুষের ৯৫ শতাংশই নারী। এ জন্য বউমেলা নামে পরিচিতি পায়। কেবল পূজার ধর্মীয় অনুষঙ্গই নয়, মেলা যেন হয়ে ওঠে সর্বজনীন আনন্দ-বিনোদনের একটি অংশ। মেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক গভীর মেলবন্ধনের সৃষ্টি হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন নানা গ্রামের ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, শিশুতোষ খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, আলতা থেকে ঘর গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস। জিলাপি ভাজা হচ্ছে ২০টিরও বেশি দোকানে। বিক্রি হচ্ছে ধুমসে। মেলাটি শুধু মেলা প্রাঙ্গণেই সীমিত নয়, এ উপলক্ষে জামাতা ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার রেওয়াজও যথারীতি চলেছে। বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারিকেল ও চিড়া-মুড়ির নাড়–। মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি শ্রী সুধীর সরকার বলেন, প্রতিমা বিসর্জনের দিন মেলাটি হয়ে থাকে। এ জন্য আগাম কোনো ঘোষণা দেওয়া হয় না। একশ বছরের বেশি সময় ধরে এদিনে মেলাটি বসছে। দূরদূরান্তের মানুষ আসে। এবার করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব রকমের সুবিধা রাখতে আয়োজক কমিটি প্রস্তুতি নিয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগে থেকেই যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। তাছাড়া হাজারো মানুষের নিরাপত্তার জন্য সারা দিন পুলিশ মোতায়েন ছিল।
ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার ইতিহাস ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে সরকারপাড়া গ্রামের মানুষ। প্রতিবছর তারা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে অব্যাহত রেখেছেন মেলার আয়োজন।