ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্টিমার চলা খাল এখন ময়লার ভাগাড়

তানজেরুল ইসলাম ও আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
🕐 ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২০

মানিকগঞ্জ শহরের একমাত্র খাল পরিপূর্ণ হয়ে আছে ময়লা-আবর্জনায়। বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন এর বুকে চলত স্টিমার, মালবোঝাই ট্রলার ও নৌকা। দখল ও দূষণে সেই খালটি এখন মৃত। ঠেসে থাকা ময়লায় পানি প্রবাহের পথ বন্ধ। উৎকট দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পথচারীদের। জমে থাকা দূষিত পানিতে জন্ম নিচ্ছে মশা। আর দুই পাড়ে পাল্লা দিয়ে চলছে দখলের মহোৎসব। বছরের পর বছর এমন অবস্থা দেখেও দেখছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। তাদের উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা এবং দায়সারা খাল উদ্ধার অভিযানে নাখোশ পৌরবাসী। খাল পুনরুদ্ধারের দাবি তাদের।

ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি মানিকগঞ্জ সদরের পশ্চিম বান্দুটিয়া থেকে শুরু হয়ে সোনাকান্দর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। এর দুই প্রান্ত মিলেছে কালীগঙ্গা নদীতে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ খালটি এখন শহরবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালের ওয়াকওয়ে দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাট ও খাবার হোটেল। জমে থাকা দুর্গন্ধময় পানিতে উড়ছে মশা। ভন ভন করছে মাছি।

মানিকগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খালটির সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়। এডিবি, জিওবি এবং ওপেকের আর্থিক সহায়তায় খালটির দুই পাড় সিসি ব্লক ও জিও টেক্স দিয়ে বাঁধানো হয়। খালের দুই পাড়ে চার ফুট চওড়া ওয়াকওয়ে, সারফেস ড্রেন ও পথচারীদের বসার জন্য নির্মিত হয় বেঞ্চ। তবে নিম্নমানের কাজ করায় নির্মাণের কয়েকমাস পরেই ধসে পড়ে সিসি ব্লক।

স্কুল শিক্ষিকা আতিয়া সুলতানা জানান, একসময় এই খাল স্রোতস্বিনী ছিল। সারা বছর পানি থাকত। খালের আশপাশের প্রতিটি বাড়ির সুয়ারেজ লাইন এখন এই খালে গিয়ে জুড়েছে। বাসা বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার একমাত্র স্থানে পরিণত হয়েছে এটি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। পৌর বাসিন্দা বুলবুল আহমেদ জানান, প্রথম শ্রেণির পৌরসভা মানিকগঞ্জের পৌর কর্তৃপক্ষ এবং পৌরবাসীর অবহেলার কারণে খালটি অনেক আগেই ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালটির একপাশে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠলেও কেউ কিছুই বলছেন না।

পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম জানান, ২০০৭ সালে খালটির সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে খালটির অবস্থা খুবই খারাপ। এমতাবস্থায় খালটি দখলমুক্ত করে নান্দনিক করার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। এডিবি কর্মকর্তারা কয়েকবার খালটি পরিদর্শন করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সিটি রিজিওন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিআরডিপি) এর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হয়। চলতি মাসে ‘সিআরডিপি’ টেন্ডারে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বলেও জানান তিনি।

 
Electronic Paper