গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারগুলোতে পাইকারি দরে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, শিম ১২০-১৪০, গাজর ৭০-৮০, বেগুন আকারভেদে ৭০-১১০, ধনেপাতা ২৩০-২৫০ টাকা। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে দেশি শসা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০, হাইব্রিড শসা ৬০, করলা ৬০-৭০, উচ্ছে ৮০-৯০, ঝিঙ্গা-ধুন্দল ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, কাঁকরোল আকারভেদে ৭০-৮০, ঢেঁড়শ ৬০, পটোল ৬০, পেঁপে ৪০, কচুমুখী ৫০, আলু ৪৫, কচুর লতি ৫০-৬০, মিষ্টি কুমড়া ৩৫-৪০ টাকা। এ ছাড়া টমেটোর কেজি ৮০-১০০, প্রতি হালি কাঁচকলা ৩০, প্রতি পিস চালকুমড়া ৪০-৫০, লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লালশাক বিক্রি হচ্ছে আঁটিপ্রতি ৫-৮, মুলা ও কলমি শাক ৮-১০, পুঁইশাক ১৫-২০, ডাঁটাশাক ১৫ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। চীনা আদা ২২০ টাকা। দেশি মসুর ডাল ৯০-১২০ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ৯০-১০০, চিনি প্রতি কেজি ৬৫ টাকা। নিত্যপণ্যের এমন ঊর্ধ্বগতি দামে মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা রহিমা নামে এক ক্রেতা বলেন, বর্তমান সময়ে দেশে যে পরিস্থিতি শুরু হয়েছে, তাতে দুই বেলা খেয়ে যে বেঁচে আছি এটাই অনেক কিছু। তারপর বাজারে এমন অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করলে সেটাও মনে হয় জুটবে না।
তিনি আরও বলেন, এক মাসের ব্যবধানে সৃষ্টি হয়েছে এমন পরিস্থিতি। এর মধ্যে পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় শতভাগ। আর ৫০ টাকার (প্রতি কেজি) নিচে তো পাওয়াই যায় না কোনো শাকসবজি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে আমাদের মতো নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ।
বাজারে এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বারবার সেই পুরনো সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে ওই সিন্ডিকেট সদস্যদের চিহ্নিত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে নানা ইস্যুতে বছরে কয়েকবার নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে তারা। আর সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অল্প সময়ে হাতিয়ে নেয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। এদিকে বাজরে পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় খুচরাতে প্রভাব পড়েছে। করোনার প্রকোপ এবং বন্যার কারণে আর সঙ্গে বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এমন দাম ঊর্ধ্বগতি। ফলে বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজি মজুদ থাকলেও অতি মুনাফার আশায় দাম কমাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।