ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রংপুরে তিন ইউনিয়নে জমজমাট প্রচারণা

রংপুর অফিস
🕐 ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২০

রংপুরে তিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে মাঠ। পোস্টার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রার্থীদের তৎপরতা। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন তারা। বসে নেই কর্মী-সমর্থকও। ব্যাপক গণসংযোগ আর ভোটকেন্দ্রিক মুখরোচক আলোচনায় সরগরম এখন নির্বাচনী এলাকা। কারা হচ্ছেন তিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার, কাকে ভোট দিলে সাধারণ মানুষের উপকার হবে, এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হবে- তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে আলাপ-আলোচনা, চলছে নানা বিশ্লেষণ। সব মিলিয়ে প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। এদিকে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলার দায় টেনে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই জনকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

আগামী ২০ অক্টোবর রংপুর সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে সদ্যপুষ্করণী ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফজলুল হক ফুলবাবু, আওয়ামী লীগের মোকছেদুর রহমান দুলু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা, স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মণ স্বাধীন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাহবুবার রহমান, চন্দনপাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আমিনুর রহমান, জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন লিটন ও বিএনপি মনোনীত মেরাজুল ইসলাম রুবেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদার রহমান, লিটন চৌধুরী ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের জিলকাদুর রহমান নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

একই চিত্র হরিদেবপুর ইউনিয়নে। সেখানে নৌকা প্রতীকের একরামুল হক, লাঙ্গল প্রতীকের মফিজুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, শাহিনুর রহমান ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আবুল হোসেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদেও চলছে তুমুল প্রচারণা। এরই মাঝে সদ্যপুষ্করণী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মোকছেদুর রহমান দুলুর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীন ও সদস্য সোহেল রানাকে গতকাল বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

রংপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার রেজাউল করিম জানান, তিন ইউনিয়নে চেয়ারম্যন পদে ১৬ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১শ’২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২০ অক্টোবর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ৩টি ইউনিয়নের ৩৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ৮১ হাজার ৫শ’৬১জন।

হরিদেবপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসন, বেকারত্ব দূরীকরণ, কলকারখানা স্থাপন, প্রতিটি রাস্তায় বাতি স্থাপনের মাধ্যমে আলোকিত করা, বর্জ্য অপসারণের সমস্যাগুলো নিরসনের মাধ্যমে মডেল ইউনিয়নে রূপান্তরিত করাই হবে তার কাজ।

চন্দনপাট ইউনিয়নের লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী রুহুল আমিন লিটন বলেন, এবার চন্দনপাট ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির জন্য খুবই উর্বর। চন্দনপাটের আমজনতা আমার সঙ্গে রয়েছে। অবশ্যই লাঙ্গল মার্কার বিজয় হবে।

তবে হাল ছাড়তে নারাজ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন চন্দনপাট ইউনিয়নে সাধ্যমত উন্নয়ন করেছি। সুখে-দুখে ইউনিয়নবাসীর পাশে ছিলাম। বাকি কাজগুলো শেষ করতে ভোটাররা আবারও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে দৃঢ় আশাবাদী।

রংপুর সদর কোতোয়ালি থানার (ওসির দায়িত্বপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা বাবলু মিয়া জানান, নির্বাচন একটি উৎসব। এই উৎসব যেন সংঘাতে পরিণত না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। যদি কেউ নির্বাচনী বিধিনিষেধ ভঙ্গ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
Electronic Paper