বিক্রিত নবজাতকে ফিরে পেলেন মা
আদিতমারী (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
🕐 ৩:৪৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০২০
লালমনিরহাট আদিতমারীতে ঋণ পরিশোধের জন্য নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়া সেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মা হাসিনা বেগম (৪০) প্রশাসনের সহযোগিতায় তার সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন। সন্তানের পাশাপাশি সরকারিভাবে ঘর ও ভাতা পেতে যাচ্ছেন তিনি।
হাসিনা বেগম উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের টেপারহাট গ্রামের জোকতার আলীর স্ত্রী। চার সন্তানের জননী বুদ্ধিপ্রতিন্ধী হাসিনা টাকার অভাবে নাড়ি ছেড়া ধন নবজাতককে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে ১০ অক্টোবর, শুক্রবার বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর রাতে নবজাতককে ফেরত এনে মায়ের হাতে তুলে দেন আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন ও আদিতমারী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম।
এর আগে জেলা প্রশাসক আবু জাফরের নির্দেশে শুক্রবার দুপুরে হাসিনার বাড়িতে যান ইউএনও মনসুর ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম। এ সময় বিক্রি করা নবজাতককে ফেরত নিয়ে আসতে ক্রেতাকে ফোন করা হলে তারা রাতে শিশুটিকে নিয়ে আসার কথা বলেন। এরপর ইউএনও ও ওসি রাতে পুনরায় হাসিনার বাড়িতে যান এবং নবজাতককে গ্রহণ করে মায়ের হাতে তুলে দেন।
এ বিষয়ে মানবিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রশাসনকে সহায়তা করায় সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইউএনও মনসুর বলেন, ‘প্রতিবেদন দেখে নবজাতককে ফেরত নিয়ে এসে হাসিনা বেগমের কোলে তুলে দিয়েছি। একই সাথে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর পক্ষে নবজাতকের জন্য ১০ হাজার টাকার পাশাপাশি হাসিনাকে প্রতিবন্ধী ভাতাভুক্তসহ তাকে ও তার ভাই কেরামতকে ঘর করে দেয়া হবে।’
নবজাতকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আরও কোনো প্রয়োজন হলে সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, ১৮-২০ বছর আগে জোকতার আলীর সাথে বিয়ে হয় হাসিনার। হাসিনা ছিলেন জোকতারের দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের কিছু দিন পর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হাসিনার ঠাঁই হয় বাবার বাড়িতে। টেপারহাট গ্রামের তালুক হরিদাস নয়াটারী গ্রামের আজিজার রহমানের মেয়ে। সংসারের খরচ বহন না করলেও স্বামী জোকতার সম্পর্ক রেখেছিল হাসিনার সাথে। এরই মাঝে তার সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলের জন্ম হয়। বড় মেয়ে রোসনার বিয়ে দেন।