ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সবজির বাজার চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০২০

দীর্ঘদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। ছয়টি সবজির কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। বাকি সবজির বেশিরভাগের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার কাছাকাছি। সবজির এমন চড়া বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে ডিম, আলু ও কাঁচা মরিচের।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ১২০ টাকা পর্যন্ত। ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ৫ টাকা।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আলুর দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ৪০ থেকে ৫০ টাকা পোয়া (২৫০) বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

অর্থাৎ কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, বরবটির সঙ্গে নতুন করে ১০০ টাকা কেজির তালিকায় নাম লিখিয়েছে করলা। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে।

বরবটির কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুনও গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

শুধু এই ছয় সবজি নয়, বাজারে অন্য সবজিগুলোও স্বস্তি দিচ্ছে না। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।

বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে মুলা ও পেঁপে। এর মধ্যে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

এদিকে স্বস্তি মিলছে না পেঁয়াজের দামেও। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজির জন্যও গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। গত মাসে ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারে আসা আব্দুর রহমান বলেন, বাজারে এসে মোটেও শান্তি পাই না। সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। ১০০ টাকার সবজি দিয়ে এক বেলাও হয় না। সবজির এত দাম আমার ৫০ বছরের জীবনে আর দেখিনি।

তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। এর মধ্যেই তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ, ডিমের দাম বেড়ে গেল। আগে কখনো পুরাতন আলুর কেজি ৪০ টাকা কিনে খাইনি। এখন পুরাতন আলুর কেজি ৪৫ টাকা কিনে খেতে হচ্ছে। এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকা দিয়ে। ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম এমন হলে আমরা চলব কীভাবে?

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মো. রাসেল বলেন, বাজারে আগের তুলনায় শিম, গাজরের সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু অন্যান্য সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণে শীতের আগাম সবজি আসার পরও দাম কমছে না। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে শীতের সবজি ভরপুর না আশা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

রামপুরার বাসিন্দা তাবারুল ইসলাম বলেন, বাজারে গেলেই শুনি কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে। একের পর একটা জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু আমাদের আয় বাড়ার বদলে উল্টো কমেছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে আমাদের পক্ষে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

 
Electronic Paper