ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণে হাতি

আনিছুর রহমান লাডলা, লালমনিরহাট
🕐 ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০

তাজমহল বানাতে না পারলেও স্ত্রী তুলশী রানীর স্বপ্ন পূরণে সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় একটি জলজ্যান্ত হাতি কিনেছেন স্বামী দুলাল চন্দ্র রায়। এটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতি গ্রামের ঘটনা। বিরল ভালোবাসার এ ঘটনা এখন জেলাবাসীর মুখে মুখে। দুলাল চন্দ্র রায় দেউতি গ্রামের মৃত বীরেন্দ্র নাথের ছেলে।

জানা গেছে, স্বপ্নে পরম ঈশ্বরের দৈব আদেশÑবাড়িতে হাতি এনে পরিচর্যা করতে হবে। পরম ঈশ্বরের আদেশ পালন করতে হবে। না হলে যে কঠিন অভিশাপ নেমে আসবে। এমন চিন্তা থেকে স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ করতেই দুলাল চন্দ্র বিক্রি করেন চাষাবাদের ৩ বিঘা জমি। সেই টাকায় গত সপ্তাহে ঘরে তুলেছেন হাতিটি।

এর আগেও দুলাল চন্দ্রের স্ত্রী তুলসী রানী পরম ঈশ্বরের আদেশ পালনে কয়েক বছর আগে স্বামীর কাছে প্রথমে একটি ঘোড়া, রাজহাঁস ও ছাগল কিনে নিয়ে সেগুলোর পরিচর্যা করেন।

গত এক বছর আগে আবারও ঈশ্বরের নির্দেশনা পান হাতি ক্রয় করে তার যতœ নেওয়ার। সেই নির্দেশনা পেয়ে পুনরায় স্বামী দুলালের কাছে হাতি কিনে দিতে বায়না ধরেন তুলসী রানী। সিলেটের মৌলভীবাজার গিয়ে সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় হাতি ক্রয় করেন তিনি। হাতিটি লালমনিরহাটে নিয়ে আসতে ট্রাক ভাড়া গুনতে হয়েছে আরও ২০ হাজার টাকা।

আর হাতিটি দেখভালের জন্য প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে ইব্রাহীম মিয়া নামে এক মাহুতকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন দুলাল চন্দ্র। দুলাল চন্দ্র রায় ও তুলশী রানীর সংসারে সদস্য সংখ্যা চারজন। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার। বাড়িতে একটি টিনের চালা ও মাটির তৈরি ঘরেই তাদের বসবাস। আর কৃষি জমি আবাদ করেই চলত তাদের সংসার।

তুলসী রানী বলেন, দেবতা মহাদেব ও বিশ্বকর্ম্মা স্বপ্নে নির্দেশ করেছেন হাতি ক্রয় করে তার যতœআত্তি নিতে। তাই স্বামীর কাছে হাতি ক্রয়ের বায়না ধরায় স্বামী সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় হাতি ক্রয় করেছেন। দেবতা যতদিন হাতিটিকে রাখতে বলবেন ততদিন হাতি তাদের বাড়িতে থাকবে।

দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, স্ত্রী স্বপ্নে দেখেছেন দেবতা হাতি কিনে যত্নআত্তি নিতে বলেছেন। তাই স্ত্রীর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই জমি বিক্রি করে সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় হাতিটি কিনি। পরম ঈশ্বর আর স্ত্রীকে খুশি করতেই হাতিটি কেনা হয়েছে।

এদিকে হাতি কেনার খবরে এলাকার লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন দুলাল-তুলসী রানীর বাড়িতে। সেই হাতিটিকে নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহলের যেন শেষ নেই। হাতিকে কলাগাছ কেটে খাওয়ানো হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতিদিন ৩ কেজি ভুষি, ২ কেজি গুড় ও ২ কাঁদি কলা খাওয়ানো।

মাহুত ইব্রাহীম বলেন, থাকা-খাওয়া সম্পূর্ণ মালিকের। এ ছাড়া মাসিক ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে মৌলভীবাজার থেকে তিনি এসেছেন। স্থানীয় দুজনকে হাতিটির দেখভালের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে তিনি চলে যাবেন।

 
Electronic Paper