করোনা পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম ভাবনা
আবু তালহা আকাশ
🕐 ২:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং কয়েক ধাপে তা বৃদ্ধি করে এখনো ছুটি চলমান। এতে সেশনজটের শঙ্কায় শিক্ষাব্যবস্থা। সেই সেশনজট নিরসনে কেমন হওয়া উচিত করোনা পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম? এ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন- আবু তালহা আকাশ
মো. আখতার হোসেন আজাদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আমরা প্রায় এক বছর শিক্ষা কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলাম। কিন্তু তাতে আমরা জাতি হিসেবে পিছিয়ে যাইনি। ক্যাম্পাস খোলার পর পাঠদানে শিক্ষকদের যদি পূর্ণমাত্রায় আন্তরিকতা থাকে তবে নিমিষেই এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। এজন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কারণ নেই। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্তমান সংকটকালে প্রত্যেক টেলিভিশনে বিটিভির খবর প্রচার আপাতত বন্ধ রেখে শ্রেণিভিত্তিক আলোচনা করা যেতে পারে।
ফয়সাল আহমেদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
আমরা দীর্ঘদিন গতানুগতিক পড়াশোনার বাইরে। কবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরব জানিনা কেউ। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ব্যাহত। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলুক পাঠ্যসূচির আগে নজর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে। ধীরে ধীরে পুরনো অভ্যাসে মানিয়ে নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। হঠাৎ করে জমে যাওয়া দীর্ঘ সিলেবাস দ্রুত শেষ করার বোঝা চাপিয়ে দিলে মানসিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকবে অত্যন্ত বেশি।
মারফি সরকার তিন্নি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
করোনার কারণে সেশনজট সৃষ্টি হবে এটা নিশ্চিত। আমার কিছু পরামর্শ হচ্ছে- প্রথমত, আমাদের সিলেবাসগুলো যদি সংক্ষিপ্ত করা হয় তাহলে আমরা অল্প সময়ের মধ্যে তা শেষ করতে পারব। দ্বিতীয়ত, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করে রয়েছে। আমাদের হাতে সময় কম তাই দুই দিন ছুটির জায়গায় একদিন করে দেওয়া যেতে পারে। এতে শিক্ষকবৃন্দ এক্সট্রা ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পাবে। তৃতীয়ত, এই বছরের সেশনের সঙ্গে পরবর্তী সেমিস্টারের কিছু সময় যুক্ত করা যেতে পারে।
ইসরাত জাহান ইমু, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
করোনায় সেশনজট নামক বিভীষিকা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্নগুলোকে বন্দি করে রেখেছে। আমি সাধারণ শিক্ষার্থী সমাজ থেকে বলতে চাই সেশনজট নিরসনে চলতি শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস কমিয়ে দিয়ে স্বল্প সময়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাগুলো নিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে যেন একটি বছর নষ্ট না হয় সেজন্য চলতি শিক্ষাবর্ষ মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি এবং ২০২০-২০২১ সেশন ২০২১ এর মধ্যেই সম্পন্ন করার জন্য ইউজিসি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
ইউসুফ আলী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
মহামারী করোনা শিক্ষার্থীদের অনেকটা মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলেছে।
এ পরিস্থিতিতে স্কুল/কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত সেশনজটের দিকে নজর দেওয়া। এক্ষেত্রে জট নিরসনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে এবং এই বছরের কোর্সের কিছু অংশ পরবর্তী বছরের কোর্সের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। নতুবা পরবর্তী তিন (৩) শিক্ষাবর্ষ নয় (৯) মাসে করা যেতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় শিক্ষকদের ও ছাত্রদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।