ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

নেই স্বাভাবিক স্পন্দন

ফরহাদ আলম
🕐 ২:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সকাল হলেই আর দেখা যায় না, ঘুম থেকে উঠে না খেয়ে তাড়াতাড়ি ক্লাসে যাওয়া, ক্লাস শেষে বউ বাজারে নাস্তা খেতে যাওয়া, বিকাল হলেই আর দেখা যায় না প্রেম পুকুরের ধারে বসে থাকা প্রেমিক-প্রেমিকার মিষ্টি মধুর গল্প, হাত ধরে পথ চলার দৃশ্য।

প্রেমিক-প্রেমিকার পদযুগলে মুখরিত থাকা ওয়াইফাই জোন এখন নিস্তব্ধ। সন্ধ্যা হলে দেখা যায় না প্রেমিকের হাত ধরে প্রেমিকাকে হলে ফেরার দৃশ্য। 

অতঃপর বন্ধুদের সঙ্গে পাকা মার্কেটে চায়ের দোকানে জমে উঠতো আড্ডা। রাত হলেই এখন আর মনে পড়ে না ডাইনিং এবং ক্যান্টিনে খাওয়ার কথা। রাত জেগে হলের ছাদে বিকশিত করার প্রচেষ্টা হাজারো লুকিয়ে থাকা প্রতিভা। ঠিক এরকম না বলে শেষ করার মতো হাজারো গল্প, কবিতা, গান আর আড্ডায় সময় কাটানো দিনগুলো কেড়ে নিয়েছে মহামারী করোনাভাইরাস। ক্যাম্পাস জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ আর আন্দোলিত হচ্ছে না।

সকাল কি সন্ধ্যা। ক্যাম্পাসটি সর্বদা মুখরিত থাকতো শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীদের পদচারণায়। শুধু প্রেজেন্টেশনের জন্য সুন্দর ফরমাল ড্রেস পড়ে ঘুরে বেড়ানো। মনের আনন্দে অজান্তেই অনেক ছবি তোলা। সর্বদা আনন্দঘেরা থাকা চিরচেনা সেই ৮৭ একরের ক্যাম্পাস এখন নীরব। নেই কোনো আলোচনা সমালোচনা। নেই কোনো ব্যস্ততা। এখন শুধু হুমায়ুন আহমেদের সেই উপন্যাসের কথা মনে পড়ে ‘কোথাও কেউ নেই।’

সেই ক্যাফেটেরিয়ায় বসে গল্পে মেতে ওঠা প্রেমিক-প্রেমিকার টেবিলগুলো এখনো ফাঁকা। নেই কোনো চামচের টিঙ টঙ শব্দ। আর জমে ওঠে না ক্রামবোর্ড আর রাতের আলোতে রেকেট খেলা। দর্শকশূন্য পড়ে আছে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি। সেখানে এখন শুধু বিচরণ করে অবলা সব ভাসমান প্রাণীগুলো। দোকানগুলোতে ঝুলছে তালা।

অডিটরিয়ামে নেই কোনো রোমাঞ্চকর অনুষ্ঠানের আয়োজন। সেমিনার রুমে হয় না কোনো শিক্ষণীয় প্রোগ্রাম। ক্যাম্পাস আড্ডার জনপ্রিয় স্থান শহীদ মিনার চত্বর, পারভেজ মার্কেট, ওয়াইফাই জোন, হতাশার মোড়, প্রেম পুকুর, পুরাতন ফ্যাকাল্টি। এখানে শেকৃবিয়ানদের আড্ডাগুলো আজ আর চোখে পড়ে না। ব্যস্ততম স্থানগুলো এখন জনশূন্য।

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকর্মীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এখন ফাঁকা। পাখির কিচিরমিচির শব্দ কানে ভেসে আসে প্রতিনিয়ত। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে অনেকের সঙ্গে গল্প করে, ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি দেখেও সময় ভালোই কাটতো। কিন্তু এখন ক্যাম্পাস একদম শূন্য শূন্য লাগে। পরিস্থিতি দ্রুত ভালো হয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসুক এটাই আশা করি।

 
Electronic Paper