ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পেঁয়াজের সিন্ডিকেট প্রতারণা

খায়রুন নেছা
🕐 ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

রান্নায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে পেঁয়াজের বিকল্প নেই। বিশেষ করে বাঙালিদের নিত্য খাবার তালিকায় পেঁয়াজ থাকেই। কিন্তু বর্তমানে পেঁয়াজের বাজারে চলছে ভয়াবহ অস্থিরতা। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ যে কতবার শিরোনামে এসেছে, তার সঠিক হিসাব বলা কঠিন।

পেঁয়াজের দাম প্রতিদিন অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কেবল ক্রেতারাই নন, বিপাকে পড়েছেন খুচরা বিক্রেতারাও। তাই ক্ষুদ্র চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন অল্প পেঁয়াজ আনছে তারা। তাতেও দামের পার্থক্য হওয়ায় মুশকিলে পড়েছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার খুচরা পেঁয়াজের দাম একেক দোকানে একেক রকম। এর কারণ হিসেবে দোকানদাররা বলেন, যে দোকানদার একদিন আগে পেঁয়াজ কিনেছেন, তিনি একটু কম দামে বিক্রি করতে পারেন কিন্তু আজ যিনি কিনেছেন তাকে একটু বেশি দামেই কিনতে হবে।

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলেছেন করোনা পরিস্থিতির কথা। করোনার কারণে পরিবহণ ভাড়া কয়েক গুণ বেশি দিতে হচ্ছে। বাজারজাত হওয়ার আগ পর্যন্ত কয়েক দফায় পরিবহনের জন্য টাকা গুনতে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির সুযোগে পরিবহণ মালিকরাও পকেট মোটা করে নিয়েছে। তারপরও সময়মতো বাজারজাত করতে পারছে না পণ্য। ফলে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজের মজুদ কম, তাই দামও বেশি। তাছাড়া ভারত পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ করায় দেশে দাম বাড়ছে দিনদিন।

কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা গেছে, দুই-তিন দিন আগে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০/৪৫ টাকা কেজি। সে পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০/৬৫ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজ ছিল ৫৪ টাকা কেজি, সে পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা কেজি দরে।

যখন বন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকছে না, এ খবর প্রকাশ করা হয় এর পরপরই পেঁয়াজের দাম কয়েক ঘণ্টায় ১৫/২০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে এখনো। গত বছরও এই সময়েই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায় এবং প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য তখন ২৫০/২৮০ টাকা পর্যন্ত হয়। একই রকম অস্থির অবস্থা লক্ষ করা যাচ্ছে চলতি বছরেও। গত বছরও ভারত পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ করেছিল। এই বছরও বন্ধ করেছে এর কারণ হিসেবে তারা বলছে, তাদের দেশেই এখন সংকট চলছে। তাই রপ্তানি বন্ধ রাখবে।

বাংলাদেশে সবসময় পেঁয়াজের চাহিদা থাকে। চাহিদাকে পুঁজি করে ভারত ও আমাদের দেশের কিছু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে। গত বছরের মতো এবারও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একশ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মজুদও গড়ে তুলেছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসনকে আরও সজাগ হতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার ওপরে জোর দিতে হবে।

খায়রুন নেছা
শিক্ষার্থী, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা
[email protected]

 
Electronic Paper