ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তছনছ শিক্ষাব্যবস্থা

তানিয়া আক্তার বর্ণা
🕐 ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

সবাই যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছি। শিক্ষাব্যবস্থাও বেশ পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষাকে অবহেলা করে যদি আগামীতে করোনামুক্ত দেশ গড়ি, তাহলে দেশ ও জাতি কি এগিয়ে যেতে পারবে? অবশ্যই না। তাই শিক্ষা খাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এখনি ভাবতে হবে, নিতে হবে পরিকল্পনামাফিক সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে দীর্ঘ এক যুগের প্রচেষ্টায় শিক্ষাব্যবস্থায় যে শৃঙ্খলা ও অভাবনীয় সাফল্য এসেছিল, করোনার থাবায় এ যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। এ ক্ষতি কি সহজে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব? ক্ষতি পোষাতে নেওয়া হচ্ছে অনলাইন ক্লাস। অনলাইন ক্লাস কি আদৌ যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে? বরং তৈরি হচ্ছে বৈষম্য। কারণ আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ শিক্ষার্থী দরিদ্র কিন্তু মেধাবী।

ফলে ইচ্ছে থাকলেও অনেকে ক্লাসে অংশ নিতে পারছে না। অন্যদিকে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাকেন্দ্রিক মন গড়ে ওঠে তার প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। আর এ কারণেই মূলত বাড়ছে হতাশা। হঠাৎ করে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায়, যাবতীয় বইপত্র হল কিংবা মেসে আটকে পড়েছে। এটাও শিক্ষার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। যার কারণে অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর অতিমাত্রায় অনলাইন নির্ভরতার ফলে আসক্ত হচ্ছি ফেসবুকে। অন্যদিকে আমাদের মস্তিষ্ক আনন্দ, উৎফুল্ল থাকতে চাই।

এ কারণে অনলাইনে পড়া বিষয়ে যখনই কিছু খুঁজতে যাওয়া হয় না কেন, তার চেয়ে বেশি ঝুঁকছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়তে যাচ্ছে ভয়াবহ সেশনজটে। তবে কি ক্ষতি কাটাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাইব? আসলে তা হবে খাল কেটে কুমির আনার সমান। ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। এজন্য এখন দরকার বিকল্প ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের নিজেকে পরিবর্তন ও সবকিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। করোনার মধ্যে দরিদ্র পরিবারের অসংখ্য শিক্ষার্থী কাজে নেমে পড়েছে।

কেউবা করছে রাজমিস্ত্রির কাজ, কেউ হয়েছেন কৃষক। করোনা কেটে গেলে যদিওবা এদের প্রতিষ্ঠানে ফেরানো সম্ভব। কিন্তু আমার দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা কী করবে? তাদের সবাইকে কি প্রতিষ্ঠানে ফেরানো সম্ভব? ঝরে পড়তে পারে অসংখ্য শিক্ষার্থী। শিক্ষাব্যবস্থার যে ক্ষতি সাধিত হচ্ছে এ থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে সরকারকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ ক্ষেত্রে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে পারে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এককালীন সহযোগিতা করা যেতে পারে। করোনা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থার যে পরিবর্তন আসবে সেটি মাথায় রেখে এখনি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তানিয়া আক্তার বর্ণা
শিক্ষার্থী, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

 
Electronic Paper