ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিক্ষায় নতুন সংকট : কিছু ভাবনা

কামরুজ্জামান
🕐 ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক নতুন সংকটের মুখোমুখি। করোনাভাইরাস এই সংকটের নেপথ্য নায়ক। মাসের পর মাস এভাবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা কেউ জানি না, ঠিক কবে, কখন স্কুল খুলবে, কবে ছেলেমেয়েরা আবার দৌড়ঝাঁপ করতে করতে পড়তে যাবে তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানে, কবে আবার স্কুলের আঙিনা বাচ্চাদের কল-কল্লোলে মুখরিত হবে।

সময়ের প্রয়োজনে মানুষ বদলে যায়। বদলে যায় দীর্ঘদিনের প্রথা ও পদ্ধতি। জীবাণু-যুদ্ধের এই সময়ে বেঁচে থাকা কিংবা একান্তই টিকে থাকার জন্য পৃথিবীর মানুষকে আজ অনেক কিছুই বদলাতে হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য সেবা, প্রশাসন, পরিচালন সবকিছুরই প্রথাগত পদ্ধতি পাল্টে যাচ্ছে প্রতিদিন। এই পরিবর্তন সম্ভব হচ্ছে দ্রুত বিকাশমান তথ্যপ্রযুক্তির কারণে। এটা ঠিক, অধিকাংশ মানুষ তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর এই ডিজিটাল জীবনব্যবস্থায় ধাতস্ত হতে সময় নিচ্ছে। তারপরও মানুষ তাদের প্রতিদিনের কাজকর্মের একটা বড় অংশই সহজে এবং ঝামেলা ছাড়াই সমাধা করছে ঘরে বসে। অনলাইনেÑ মোবাইলে, ল্যাপটপে অথবা ডেস্কটপে। এ রকম একটি বাস্তবতায় বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। যদিও পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাস পুরনো, তথাপি বাংলাদেশে এটি প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা পেতে শুরু করেছে এ করোনাকালে। 

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমনিতেই ত্রুটিপূর্ণ। একটি দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়ার দরকার শিক্ষায়। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরেও সত্যটি তেমন করে উপলব্ধি করতে পারিনি। ২০১০ সালে, দেশ জন্মের দীর্ঘ ৩৯ বছর পরে এসে, আমরা একটি জাতীয় শিক্ষানীতি পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু এর বাস্তবায়ন এখনো সেভাবে আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি আমরা এখন পর্যন্ত শিক্ষাকে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নাকি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হওয়া উচিত, তা নিয়ে এখনো আমরা একমত নই। তাই এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না, কাঠামোগত সংস্কারের পাশাপাশি দরকার নীতি-প্রণেতাদের মনস্তত্ত্বে বড় ধরনের সংস্কার।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কলাভবনের ওয়ালের একটি সেøাগানে (সম্ভবত ছাত্র ইউনিয়নের) প্রায়ই চোখ আটকে যেতÑ ‘শিক্ষা সুযোগ নয়, অধিকার’। মানসম্মত শিক্ষা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার, যা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। ধনী-গরিব এখানে কোনো বিষয় নয়। সবাই সমান শিক্ষা, সমভাবে পাওয়ার অধিকার রাখে। এটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এর জন্য কোনো সংগ্রাম বা তদবিরের প্রয়োজন নেই। অমোঘ সত্যটি যদি ঠিকভাবে বুঝতে পারি, তবে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সংস্কার হয়ে যায়। তাহলেই কেবল প্রাথমিক বা মৌলিক স্তরের শিক্ষায় ভয়ঙ্কর বিভাজন নির্মূল করে প্রজন্মকে অন্তত চরম বিভ্রান্তি ও অনিষ্টতা থেকে মুক্তি দেওয়া যায়।

দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা একাধিক ধারায় বিভাজিত শিক্ষাকাঠামোর ফলে সৃষ্ট বৈষম্যকে আরও ঘনীভূত করেছে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা। অললাইনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থাকে ভার্চুয়াল এডুকেশন, ই-লার্নিং, ডিস্ট্যানসড লার্নিং ইত্যাদি বিভিন্ন নাম দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রচলিত পদ্ধতির মতো একই স্থানে (সাধারণত শ্রেণিকক্ষ) অবস্থান না করে দূরবর্তী বা ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষা পরিচালনার জন্য ন্যূনতম চারটি বিষয়ের নিশ্চয়তা থাকা প্রয়োজন। এক. ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসÑ মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার, দুই. দ্রুতগতির এবং নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, তিন. একটি প্লাটফরম যেমন, সাপোর্টেড অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার (এপস), চার. শিক্ষকের জন্য আরও কিছু ডিভাইস- লাইট, ক্যামেরা, রাইটিং বোর্ড ইত্যাদি। এর বাইরে আরো যা প্রয়োজন তা হল একটি জাতীয় নীতিমালা, যাতে শিক্ষাদানের পদ্ধতি, শিক্ষকদের করণীয়, তাদের ট্রেনিং, মূল্যায়ন পদ্ধতি ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে। দেখা দরকার, এসব ইস্যুতে আমাদের সক্ষমতা কোন পর্যায়ে রয়েছে।

সাম্প্রতিক একটি জরিপে উঠে এসেছে বাংলাদেশের ৩৭ শতাংশ এলাকা এখনো কার্যকরি ইন্টারনেট পরিসেবার বাইরে রয়েছে, ৬৫ শতাংশ মানুষের কাছে কোনো স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার নেই। মোট মুঠোফোন ব্যবহারকারীর মাত্র ১০ শতাংশ ফোরজি মাত্রার ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তবে এই জরিপ মোট জনসংখ্যার মধ্যে না করে শুধু গ্রামের বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে করলে অবস্থা আরও নাজুক দেখাবে। দ্বিতীয়ত, শিক্ষকদের একটি বড় অংশই জানে না, অনলাইন শিক্ষা কী, কীভাবে পরিচালিত হয়। কেবল শিক্ষকই নন, পাঠগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদেরও এ পদ্ধতির সঙ্গে এখনো তেমন পরিচিতি ঘটেনি।

তৃতীয়ত, অনলাইন শিক্ষা প্রদানের জন্য সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ তেমন কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। বিশেষ কোনো অবকাঠামো এখনো সৃষ্টি হয়নি। সরকার তার কর্মসূচিগুলো কেবল সরকারি টিভিতে কিছু অনলাইন ক্লাস পরিচালনার মধ্যে সীমিত রেখেছে।

চতুর্থত, এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা বা পলিসি নেই; তেমন কোনো উদ্যোগও দেখছি না। এই যখন অবস্থা, তখন বেসরকারি পর্যায়ে অনলাইন শিক্ষায় কিন্তু অগ্রগতি রয়েছে। বিশেষ করে যারা কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, তারা কিন্তু থেমে নেই। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা পরিস্থিতি বুঝে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কোচিং দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। জুম, গুগল ক্লাসরুম কিংবা ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে তারা এখন পর্যন্ত অনেকটা নির্বিঘ্নেই শিক্ষাদান করে আসছে।

অন্যদিকে এসব কোচিং-শিক্ষকদের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। কারণ, আগে যেখানে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী একটি ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারত, এখন সেখানে অনেক বেশি শিক্ষার্থী একই সঙ্গে যুক্ত হতে পারছে। শিক্ষকরা মাঝে মাঝে আবার অনলাইন ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নিচ্ছেন, মূল্যায়ন করছেন এবং নোটসের সফট কপি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সুতরাং তাদের বাণিজ্য শুধু চলছেই না, দুর্দান্ত গতিতে চলছে। তাছাড়া শহরকেন্দ্রিক অধিকাংশ স্কুলও এখন অনলাইন সেশন শুরু করেছে। শহরের ছেলেমেয়েরা এখন ঘরে বসেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে; প্রতিদিনের ক্লাস শিডিউল অনুসারে তাদের অনলাইনে ক্লাসে সক্রিয় থাকতে হচ্ছে। কিন্তু এ চিত্র নিঃসন্দেহে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কথা বলে না। শহরের বাইরে গ্রাম পর্যায়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর কাছে এ সুযোগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গ্রামের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে পড়ালেখা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থেকে যাচ্ছে। তাদের জন্য বিকল্প ভাবনাও কেউ ভাবছে না।

প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা, অবকাঠামো এবং আনুষঙ্গিক সক্ষমতা না থাকায় দেশের এ শিক্ষার্থীরা নতুন বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন এক শিক্ষা সংকট। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা শিক্ষা পৌঁছে দিতে পারছি না, তাদের বৈষম্যপূর্ণ একটি শিক্ষা-পরিকাঠামোর মধ্যে বেড়ে উঠতে হচ্ছে। এটা জাতি হিসেবে কষ্টের জায়গা। অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না।

অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষা-বৈষম্য বরং কমিয়ে আনার কথা। ভার্চুয়াল দুনিয়া সবার জন্য সমভাবে উন্মুক্ত। এই ব্যবস্থা বিশ্বের সকল শিক্ষার্থীদের এক করে দিয়েছে। যেকোনো শিক্ষক এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষক, যেকোনো ছাত্র এখন আন্তর্জাতিক ছাত্র। আমার এক বন্ধু মালয়েশিয়ায় বসে পটুয়াখালীতে অবস্থানরত তার মেয়েকে অনলাইনে পড়ায়। এই বাংলাদেশেরই অসংখ্য ছাত্র আজ ঘরে বসে বিদেশি নামী-দামি বিশ্ববিদ্যালের কোর্স করছে, ডিগ্রি নিচ্ছে, মোটিভেশনাল স্পিকারদের ভিডিও দেখছে। জ্ঞানার্জনের পথ ও পদ্ধতি উন্মুক্ত, জ্ঞানের উৎসও অফুরন্ত। আমরা প্রতিদিন যা শিখছি, তার একটা বড় অংশই ইন্টারনেট থেকে। ইউটিউব, ফেসবুক, লিংকডইন এগুলো আজ নিছক সময় কাটানোর মাধ্যম নয়। অফুরন্ত জ্ঞানের ভা-ার থেকে দরকারমতো জ্ঞান সিঞ্চন করার অনন্য মাধ্যম।

সত্যিকার অর্থে, শিক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, ছাত্র- শব্দগুলোর ধারণায় এখন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষাসহ সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বর্তমান উপরিকাঠামো হয়ত একসময় পাল্টে যাবে, কিছু কিছু বিলুপ্ত হবে। শিক্ষক হবেন ফ্রিল্যান্সার। সেদিন হয়ত বেশি দূরে নয়। যেদিন হয়ত শিক্ষার্থীদের ওঊখঞঝ করে, পাসপোর্ট ভিসা করে হাজার হাজার ডিলার খরচ করে বাইরে পড়তে যেতে হবে না। আমেরিকার কোনো শিক্ষক হয়ত ইংল্যান্ডে বসে বাংলাদেশ কিংবা অন্য কোনো দেশের শিক্ষার্থীদের পড়াবেন। এখনই তো গুগল কিংবা অ্যাপলে জব ইন্টারভিউয়ের জন্য কাউকে আর তাদের অফিসে ছুটে যেতে হয় না। ট্যাক্স বার্ডেন কমানোর জন্য আমেরিকার নাগরিকরা বারমুডায় গিয়ে বসতি গড়ছে আর অনলাইনে ঘরে বসে অ্যামাজনের অফিস করছে।

তাই সারা দুনিয়া প্রযুক্তির ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা সেখানে পিছিয়ে থাকবে না, পিছিয়ে নেই। পৃথিবীব্যাপী ভার্চুয়াল শিক্ষার যে প্রসার ঘটছে, তা একদিন হয়ত স্বাভাবিক নিয়মেই আসত। করোনা এসে এর গতি ত্বরান্বিত করেছে মাত্র। প্রয়োজন আইন মানে না। তাই সব পরিবর্তনই হচ্ছে সময়ের প্রয়োজনে। কেউ কেউ হয়তো প্রযুক্তির এ ব্যাপক প্রসারের বিরুদ্ধে বলবেন, অপপ্রয়োগ নিয়ে বলবেন। অবশ্যই, সেটা অগ্রাহ্য করার উপায় নেই। তবে তার জন্য এর সর্বজনীন গুরুত্বকে অস্বীকার করা যাবে না।

তাছাড়া কেবল শিক্ষা নয়, আজ হোক, কাল হোক একসময় প্রযুক্তিই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। চাইলেও কেউ প্রযুক্তির এই মহাস্রোতের বাইরে থাকতে পারব না। অনেকেই হয়ত কল্পনাও করতে পারি না, আজ থেকে মাত্র দশ বছর পরে প্রযুক্তির দুনিয়া কেমন হবে। যেমনটি আমরা ২০১০ সালেও ভাবতে পারিনি, স্মার্টফোন নামের ছোট্ট ডিভাইস মাত্র এক দশকে জীবনে কতটা ইম্প্যাক্ট ফেলবে। আসলে প্রযুক্তিকে ভয় পেয়ে অথবা অগ্রাহ্য করে কিছুই অর্জন করতে পারব না, বরং উন্নয়নের দৌড়ে পিছিয়ে পড়ব অথবা পরিবর্তনের তীব্র স্রোতে হারিয়ে যাব।

তাই সময় এসেছে সামগ্রিক শিক্ষাকাঠামোকে যুগের চাহিদামাফিক ঢেলে সাজানোর। সময় এসেছে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনকে মেনে নেওয়া, প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি, ব্যাপকভিত্তিক অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। দরকার দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সৃষ্টি করা, শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং ছাত্র-ছাত্রীদের এ বিকল্প ব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলা।

এ কথা সত্য, অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিচারে সরকারের একার পক্ষে সকল শিক্ষার্থীর হাতে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে বিকল্প উপায় বের করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। একই পাড়া বা মহল্লার শিক্ষার্থীরা একটি কমন ডিভাইসের মাধ্যমে ক্লাসে গ্রুপভিত্তিক অংশগ্রহণ করতে পারে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এই খাতে সরকারের বিশেষ প্রণোদনার প্রয়োজন রয়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগেরও প্রয়োজন রয়েছে। পৃথিবীর তাবৎ প-িতজন একটি কথা স্বীকার করেছেন, জাতি গঠনে সবচেয়ে ফলদায়ক হচ্ছে শিক্ষায় বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে জাতিকে বহুগুণে ফিরিয়ে দেয়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর ও সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণে সত্যটি উপলব্ধি করা প্রয়োজন।

কামরুজ্জামান : ব্যাংক কর্মকর্তা
[email protected]

 
Electronic Paper