ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভেট্টরিতে বদলালেন তাইজুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১২:০৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০

অনেকটা ড্রাগ লাইনে চলে গিয়েছিলেন। বিশেষ করে সাকিবের উপস্থিতি মানেই তাইজুলের দলে থাকাটাই দুঃস্বপ্ন। রঙিন ক্রিকেট, সে তো অনেক আগেই পিছিয়ে পড়েন। ওয়ানডে ক্রিকেটেও তার ঠাঁই নেই। যা কিছুটা লংগার ভার্সন ক্রিকেট জুড়েই এখন তার যা কিছুটা স্বপ্ন। সেখানেও জাতীয় দলে ফিরতে গিয়ে বেশ পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় তাইজুল ইসলামকে। ২৯ টেস্টে ১১৪ উইকেট পেয়েছেন। পাঁচবার পেয়েছেন ৪ উইকেট করে, সাতবার পেয়েছেন পাঁচ উইকেট করে। আর ম্যাচে ১০ বা তার বেশি উইকেট পতন ঘটিয়েছেন মাত্র একবার।

তারপরও সাকিবের পর তিনিই টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ও সফল বাঁ-হাতি স্পিনার। সাকিব না থাকলে তো তাইজুল ইসলামই বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের প্রধান অস্ত্র। বলে টার্ন খুব একটা বেশি না থাকলেও লম্বা সময় বোলিং করার ক্ষমতা তার রয়েছে। 

কিন্তু সেটা সংক্ষিপ্ত ক্রিকেটে খুব একটা কার্যকর নয়। সীমিত ওভারে সফলতা পেতে হলে দরকার বোলিংয়ের বৈচিত্র্যতা। সেই কাজটি এতদিন কঠিন হলেও নতুন কোচে ফিরে পেয়েছেন যেন যৌবন। নিজের বোলিং অ্যাকশনে এনেছেন পরিবর্তন। যেখানে দিক-নির্দেশনা ছিল স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরি। গতকাল মঙ্গলবার বিসিবির দেওয়া ভিডিও বার্তায় সেই বোলিং অ্যাকশন বদলে ফেলার কথা শোনালেন তাইজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘মূলত আমার আগের যে অ্যাকশনটা ছিল, তাতে জায়গামতো বল করাটা অনেক সুবিধা ছিল; কিন্তু ওই অ্যাকশন তিন ফরম্যাটে চালিয়ে নেওয়া কঠিন। তাতে বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের মাত্রাটা খুব একটা ছিল না। এখন যে নতুন বোলিং অ্যাকশন, এটা নিয়ে ভেট্টোরির সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আমাকে বলেছেন, ‘এই অ্যাকশন দিয়ে তিন ফরম্যাটে খেলতে পারবা।’

তাইজুল আরও বলেন, ‘আসলে বিভিন্ন দিক চিন্তা করেই অ্যাকশন পাল্টে ফেলেছি। বলের বাউন্স ও বিভিন্ন বৈচিত্র্যের কথা চিন্তা করে অ্যাকশনটা পরিবর্তন করা।’

তাইজুলের অনুভব, এই অ্যাকশন বদলে নাকি এরই মধ্যে ফলও পাচ্ছেন। তার বোলিং বৈচিত্র্য আগের চেয়ে বেড়েছে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যে ফলাফলও পাচ্ছি ব্যাটসম্যানদের বল করে। বৈচিত্র্যের দিকেও সাহায্য করছে নতুন অ্যাকশনটা।’

তাইজুল তার এই পরীক্ষাটা চালিয়ে যাচ্ছেন তামিম, মুশফিক, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, লিটন ও সৌম্য সরকারসহ দেশের প্রায় সব বড় ও প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের ওপর। তাদের নিয়মিত বল করে যাচ্ছেন তিনি। তাইজুলের বিশ্বাস, শেরে বাংলার সেন্টার উইকেটে দেশের সব বড় বড় ব্যাটসম্যানকে বোলিং করে ওই বদলে ফেলা অ্যাকশনকে আরও আত্মস্থ করে ফেলেছেন। তার দাবি গত দুই সপ্তাহ শেরে বাংলার নেটে বোলিং করায় তার উপকার হয়েছে। এই নতুন বোলিং অ্যাকশনটা তার শরীরের সঙ্গে মানিয়ে গেছে। এখন লম্বা স্পেলে টানা দুই ঘণ্টাও বল করতে পারছেন।

এ সম্পর্কে তাইজুলের ব্যাখ্যা, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বোলিং নিয়ে কাজ করেছি। আমি ভেট্টোরির সঙ্গে কথা বলেছি আমার অ্যাকশনের বিষয়ে, মাঝে অ্যাকশন বদলেছিও। ব্যাটসম্যানদের এখন বলও করছি। আমার শরীরের সঙ্গে অ্যাকশনটা মানিয়ে গেছে। এখন দুই ঘণ্টা বোলিং করতেও সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ব্যক্তিগত কিছু অনুশীলন ছিল, প্রত্যেকটা খেলোয়াড় এক-দুই ঘণ্টা করে সেশন করছিল। এই সেশনগুলো করাতে, ব্যক্তিগত অনুশীলন করাতে খেলোয়াড়দের সুবিধাটা হয়েছে- যার যার কাজগুলো নিজের মতো করে করতে পারছি। আত্মবিশ্বাস লেভেল বেড়ে গেছে। এখন ব্যাটসম্যানদের বল করা শুরু করেছি দুই সপ্তাহ হচ্ছে। কিছুদিন গেলে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাবে।’

তবে শ্রীলঙ্কা সফরকে ঘিরে তাইজুলের এই ব্যতিক্রমী ফিরে আসায় তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের বেঁধে দেওয়া শর্তেই বড় বাধা। আর সেখানেই শ্রীলঙ্কা সফরটা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটারদের জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা কঠিন। তাইজুলের প্রত্যাশা সুন্দর একটি সুরাহা দুই বোর্ডের সমঝোতায় বেরিয়ে আসবে।

তাইজুলের মতে মাঠের অনুশীলন যথেষ্ট নয়। নিজেকে ধরে রাখতে আর ছন্দে থাকতে চাই ম্যাচ খেলা। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা যারা ক্রিকেটার বা যে কোনো ইভেন্টের খেলোয়াড়ই হোক, এতদিন খেলার বাইরে থাকাটা খুব কঠিন। আমরা সবসময় খেলতে পছন্দ করি। সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজ আছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটা হলে আমরা সবাই আবার মাঠে ফিরতে পারবো। আমরা আগের পরিস্থিতিতে ফিরতে পারলে ভালো লাগবে।’

 
Electronic Paper