চিনির বিকল্প স্টেভিয়া চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
আখের চিনি, বিটের চিনি ও অন্যান্য মিষ্টি-জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু ক্যালোরি না থাকায় খেতে বাধা নেই স্টেভিয়ার উৎপাদিত মিষ্টি খাবারে। তাই চিনির বিকল্প হিসেবে ক্যালোরিহীন ও চিনির চেয়েও অধিক মিষ্টি স্টেভিয়ার চাষ হচ্ছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের সুগার ক্রপস গবেষণা কেন্দ্রে। এটি ১১টি ঔষধি গুণ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের চা তৈরির প্রাকৃতিক মিষ্টিসমৃদ্ধ উদ্ভিদ।
এ উদ্ভিদ মানবদেহের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। জানা গেছে, এ গাছটির আদি উৎপত্তি প্যারাগুয়ে। সেখানে ১৯৬৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে স্টেভিয়ার চাষ শুরু হয়। বর্তমানে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, কোরিয়া, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে দুর্লভ এটি ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে।
২০০১ সালে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট মানবদেহের উপকারী এ উদ্ভিদটি থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করে। দীর্ঘ গবেষণা ও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে পাবনার ঈশ্বরদী ও দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে স্টেভিয়া বা মিষ্টি পাতা প্রজাতির এ উদ্ভিদের চাষ শুরু হয়।
ঠাকুরগাঁও সুগার ক্রপস গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরিফুল ইসলাম জানান, স্টেভিয়া প্রজাতির এ উদ্ভিদের পাতা চিনির চেয়ে ৩০-৪০ গুণ মিষ্টি। ক্যালোরিমুক্ত এ মিষ্টি ডায়াবেটিস রোগী সেবন করলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ পরিবর্তন হয় না। এ ছাড়া রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণসহ দাঁতের ক্ষয় রোধ ও ত্বকের কমলতা এবং লাবণ্য বৃদ্ধি করেÑএমন গুণগত উপাদান রয়েছে এ উদ্ভিদে।
তিনি আরও জানান, বছরের ৯ মাস টবে অথবা মাটিতে এর চাষ করা সম্ভব। এটি কম্পোজিটি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।
জাপান, চীন ও কোরিয়ায় বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে উদ্ভিদ। এর গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার পর ঠাকুরগাঁও এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে চাষ শুরু করেছেন।
বাণিজ্যিকভাবে স্টেভিয়া উৎপাদন করে পৃথিবীর অনেক দেশেই এর পাতা বিক্রি করে প্রচুর বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।