দাঙ্গাপুরের হাঙ্গা
গোলাম মোর্তুজা
🕐 ১:২৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২০
দাঙ্গাপুর গ্রামের হাঙ্গা, স্ত্রীর নাম খাম্বা। হাঙ্গা একদিন বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে এলো ঘরে। রাত তখন বারোটার পরে। স্ত্রীর কান সোচ্চার জেগে ওঠে একটু শব্দ হলে টুঙ্কার। খাম্বা বেগম ঘরের আলোটা নূরানি করে শুয়ে পড়েছে। বাইরেও ডিমলাইট মিটমিট করে জ্বলছে। খাম্বা তুলল হাম্বা।
জাগল। বেসুর হলো। বলল, ‘এত রাতে পেছন দরজা দিয়ে কেন এলে বল?’ এখনি জ্বাল রে জ্বাল আগুন জ্বাল। হাঙ্গা সারাদিন কাজ করবার পর সন্ধ্যের পরে, বের না হলে রাতে মনটা হইহই করে। তাই নিয়ম করে যায় প্যাঁচালপুর মোড়ে। প্রায় তিন চারজন একসঙ্গে জোড়ে। আজ একটু বেশিই রাত হয়ে গেছে। আড্ডার সময় ওসব কী আর মনে পড়তে আছে।
চালাকির কী আর শেষ হয়। সামনের দরজা বন্ধ পেছনের দরজার নকল চাবি বানিয়ে নিয়ে হাঙ্গায়। সন্তান একটা নাম তার ফুল। খাম্বা জাগল তুমুল। বলল, ‘যেখান থেকে এসেছ সেখানেই চলে যাও। পেছনের গেটের চাবি কোথায় পেলে বলতে হবে সেটাও।’ খাম্বা একটু থেমে, ভাবখানা কিছু গেছে ভ্রমে। নাক নড়াল।
ছেলের মাথায় হাত দিল। তারপর আবার বলল, ‘ঘরে শুলে তোমার ফুলের মাথা খাও। আর কথা নয় এখন যাও, বাইরে যাও।’ ছেলে ফুলের মাথা খাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। খাবারেরও জো নাই। বড়ই কঠিন কাজ। বরং ঘর হতে বের হতে নাই কোনো লাজ। খাম্বা একটু শিক্ষিত কিনা। গেরামের বেরাক স্কুলে পড়ায় অ, আ বেতন বিনা। আবার খাম্বার রাগ ভালো না।
পরিবারে সামান্য টুংটাংয়ে খায় পটাশ সারের দানা। হারপিকও খেয়েছিল ন’মাস দশ দিন আগে। হাঙ্গা চলে সাবধানে রাখতে চায় বউকে বাগে। হাঙ্গা বলল, ‘আচ্ছা তাই হোক যাচ্ছি বাইরে। তুমি থাক ঘরের ভেতর।’
হাঙ্গার কথায়। খাম্বা চেতে যায়। বলে, ‘আমি কীভাবে বললাম আর তুমি কীভাবে বলছ। ভালো করে কথা বলাও শিখলে না আজও।’ হাঙ্গা তো আরও বিপদে। কথার জবাব দিলেও বান্ধে। এ বাড়িতে আছেন হাঙ্গার মা ও বাবা। ওনাদের কাছে ছেলে পবিত্র কাবা। বেগুনা। যেন ভাজা মাছটি চাবিয়ে খেতে জানে না। এই রাতে ঘুমিয়ে যে যার মতো। হাঙ্গা যদি একটুখানি শোবার স্থান পেত।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228