ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মহান নায়কের উত্থান

কাজী সুলতানুল আরেফিন
🕐 ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২০

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানিরা শেখ মুজিবকে বন্দি করার পরও হত্যা করার সাহস করেনি। আমরা স্বাধীন হলাম। বিশ্বমানের নেতাও পেলাম। যার হাতে সোনার বাংলা অধিষ্ঠিত হবে রঙিন হয়ে। সেই নেতাকে নিয়ে নতুন আশায় জনগণ স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছিল। কয়েক বছর আগে যার নেতৃত্ব সবার বুকে আগুনের পরশ বুলিয়ে দাউদাউ করেছিল সে জাতিরই কিছু হায়না চুষে নিল মুজিবের রক্ত। সঙ্গে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকেও জর্জরিত করে চিরনিদ্রায় শায়িত করে। শিশু শেখ রাসেলও নিস্তার পেল না হায়নাদের বুলেট থেকে। শেখ রাসেলকে হত্যার আগে তাদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল না কেন? তাদের বোধহয় অন্তরাত্মাও ছিল না।

মীর জাফরদের পরিণাম কখনোই ভালো ছিল না। নবাব সিরাজ উদদৌলার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা মীর জাফরের পরিণতি সম্বন্ধেও আমরা জানি। মুজিবের সঙ্গে যারা মীর জাফরি করেছে তারা যে উদ্দেশ্যেই করে থাকুক না কেন সেটা কি পূরণ হয়েছিল? ঘৃণায় ভরে থাকবে তাদের ইতিহাসের পাতা। স্বাধীনতা পরবর্তী স্বার্থের বিভক্তির কারণে জাতি বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত হয়েছে।

স্বাধীনতার আগে বা যুদ্ধ চলাকালে সবাই মুজিবকেই নেতা মেনে নিয়েছিল। পরে আবার সে প্রাণের নেতাকে কিছু মীর জাফর হত্যা করে পুরো জাতিকে লজ্জার অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করেছে। আজ আমরা স্তম্ভিত। আমাদের নেতাকে অন্য কেউ মারেনি। মেরেছে আমাদেরই স্বদেশি। আগস্ট মাস এলে আমরা বিমর্ষ হই। এ লজ্জা আর কতকাল বয়ে বেড়াব? ১৫ আগস্টে সূর্য ওঠে ব্যথাভরা রশ্মি নিয়ে। ব্যথা যার কেবল সে জানে ব্যথার বেদনা কী! এত বড় পরিবার হারানোর ব্যথার বিষ কেমন যন্ত্রণাদায়ক তা কেবল প্রধানমন্ত্রী জানেন। আরও জানেন বোন শেখ রেহানা।

ছাত্ররাজনীতি দিয়েই এই মহান নায়কের উত্থান হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণ বাঙালির মনে স্বাধীনতার দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছিল। যে ভাষণ রক্তে রক্তে বয়ে দিয়েছিল প্রতিবাদের সুর। ভেঙে দিয়েছিল পরাধীনতার কঠিন শৃঙ্খল। এই ভাষণ পেল বিশ্বস্বীকৃতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই মহান নেতাকে নিয়ে আমাদের গর্ব আরও বেড়ে গেছে।

পৃথিবীর সবাই স্বাধীনতার অগ্রদূত হিসেবে আমাদের এই মহান নেতাকে মান্য করতে দ্বিধা করে না। কেমন জাতি আমরা? আমাদের মহান নেতার পরিণতি আজ আমাদের রক্তে কেন শিহরণ জাগায় না? শিশু শেখ রাসেলের আর্তনাদ কেন আমরা আজ কল্পনায়ও শুনতে পাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার না দেখা অশ্রু কেন আমরা অনুধাবন করতে পারি না? দেশের ডালে ডালে ঘাপটি মেরে থাকা হুতুম পেঁচারা আজও দেশের রক্ত চুষে খাচ্ছে। আমরা যদি মুজিব আদর্শকে অনুসরণ করতে না পারি, তবে আসুন আবারও লজ্জিত হই। আবারও মরার আগে মরি। লজ্জাহীন মরে বারবার।

কাজী সুলতানুল আরেফিন : লেখক

[email protected]

 

 
Electronic Paper