৪৯ বছর আগের ও পরের যুদ্ধ
অপর্ণা দত্তগুপ্ত
🕐 ৬:০২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ০৬, ২০২০
৭ মার্চ, ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার জন্য বাঁশের লাঠি নিয়ে আপামর জনতা দলে দলে যোগদান করেছিল রেসকোর্স ময়দানে। সেদিন দেখেছিলাম বাঙালির মধ্যে অভূতপূর্ব একতাবদ্ধ হওয়ার প্রতিজ্ঞা; দৃশ্যমান শত্রুর বিরুদ্ধে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে লড়াই করার। সে প্রতিজ্ঞা পূরণ করেছে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রসহ আপামর জনতা। যা পরিপূর্ণতা লাভ করে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ। দীর্ঘ ৪৯ বছর পর এবার দৃশ্যপটে এক অদৃশ্য শত্রু। চলতি বছরের মার্চ মাসের কথাই ধরা যাক। উন্নত বিশ্বে এই অদৃশ্য শত্রুর হানা আমরা আগেই দেখেছি। কিন্তু এই উপমহাদেশে এই বহুল আলোচিত অদৃশ্য শত্রুটির ভয়ঙ্কর রূপ দেখতে পেলাম আরও অনেক পরে।
এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রক্রিয়া কিন্তু খুব বেশি জটিল নয়। এটি শুধু একটুকরো কাপড় দিয়ে বানানো মাস্ক পরিধান, কাপড় কাঁচার সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়া এবং নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা। এবং আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাইরে বের না হওয়া।
১৯৭১ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন যারা এবং আমাদের নির্ভীক অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের ট্রেনিং ক্যাম্পে শুনত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জাগরণের গান, খবর, জল্লাদের দরবার, চরমপত্র ইত্যাদি।
যা উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা যোগাত মুক্তিযোদ্ধা এবং আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের। ঠিক তেমনি এখন দুপুর আড়াইটায় আইইডিসিআর-এর ব্রিফিং শুনি, তখন আমাদের মধ্যে উৎসাহের চেয়ে হতাশাবোধটাই কাজ করে সবচেয়ে বেশি।
তাহলে, আসুন আমরা আবার ৪৯ বছর আগে সেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ফিরে যাই, যেভাবে আমরা সবাই দেশের ভেতরে বাইরে একতাবদ্ধ হয়ে দৃশ্যমান শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, এবার আমরা এই তিনটি নিয়ম মেনে সে অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে বিশ্বে আরেকবার সম্মান এবং গৌরবগাঁথা পুনরুদ্ধার করে নিয়ে আসি। এতে লাভবান হব আমি, আপনি অর্থাৎ আমরা সকলেই।
অপর্ণা দত্তগুপ্ত, শ্যামলী, ঢাকা ১২০৭