২৪ ঘণ্টায় বর্জ্যমুক্ত হবে ঢাকা নগরী
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০
কোরবানির পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণে প্রস্তুত হচ্ছে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এ জন্য অতিরিক্ত জনবল, যানবাহনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করে কাজ করবে সংস্থা দুটি। প্রতিবারের মতো এবারও নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত বছরের ঈদুল আজহায় কোরবানি থেকে প্রায় ৪০ হাজার টন বর্জ্য হয়। এবার করোনা পরিস্থিতিতে পশু কোরবানি কম বলে ধারণা করছে দুই সিটি করপোরেশন। তবুও এ পরিমাণ বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই কাজ করা হচ্ছে বলে জানান সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্টরা। ঈদের প্রথম দিনেই নিজেদের এলাকায় ১০ হাজার টন বর্জ্য হতে পারে মনে করছে ডিএনসিসি। ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ২৫৬টি স্থান পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সংস্থাটি।
ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, এবারের কোরবানির বর্জ্য যেন শুধু ২৪ ঘণ্টায় না বরং দ্রুততম সময়ে অপসারণ করা যায়, সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। এজন্য নগরবাসীর সহযোগিতা অবশ্যই লাগবে। নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। আমাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও ২৫০ জন করে ইমাম এবং মাংস প্রস্তুতকারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগরবাসীর জ্ঞাতার্থে আমরা মাইকিংসহ মসজিদের বয়ানে এগুলো ঘোষণা করছি।
কমডোর সাইদুর আরও বলেন, কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণের জন্য অতিরিক্ত জনবল ও যানবাহন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ডিএনসিসির নিজস্ব, আউটসোর্সিং এবং প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি) কর্মীসহ মোট ১১ হাজার ৫০৮ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ডিএনসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রস্তুত থাকবেন। এ জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বর্জ্য অপসারণের জন্য ভারী ও হালকা মোট ৪৩০টি যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষভাবে ১১টি পানির গাড়ির মাধ্যমে স্যাভলন ও ব্লিচিং মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে জবাইয়ের স্থান দূষণমুক্ত করা হবে।
পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় ৫১ টন ব্লিচিং পাউডার ও ৫ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৯৬০ ক্যান তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে। আর নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৬ লাখ পিস বিশেষ ব্যাগ বিতরণ করা হবে। এসব ব্যাগে বর্জ্য ভরে রাখলেই আমাদের লোকেরা দ্রুততম সময়ে সেগুলো অপসারণ করতে পারবেন।
অন্যদিকে ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে মোট ৭৫টি স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে পশু জবাইয়ের জন্য। যেহেতু অনেকেই ঈদের তৃতীয় দিনেও পশু কোরবানি করে থাকেন, তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানান সংস্থাটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর বদরুল আমিন।
কমডোর বদরুল আমিন বলেন, অনেকে ঈদের তিনদিনের দিনও পশু কোরবানি করেন। তাই সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রতিদিনের পশুর বর্জ্য তার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ করা হবে। প্রায় ৬ হাজার লোকবল কাজ করবে। আমাদের নিজস্ব পাঁচ হাজার এবং অতিরিক্ত আউটসোর্সিং থেকে আরও এক থেকে দেড় হাজার লোক নিয়োগ করা হবে। আমরা ব্লিচিং পাউডার এবং স্যাভলন ছিটাব। এক লাখ ব্যাগ দেব নগরবাসীর বর্জ্য ফেলার জন্য। এক লাখ প্রচার লিফলেট বিতরণ করা হবে।