ক্যাম্পাসে ফেরার আকুলতা
রাকিব হোসেন
🕐 ১:৩৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২০
করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা। ‘লকডাউন ’ নামক চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ। ঘরবন্দির একঘেয়েমি আর ভালো লাগছে না শিক্ষার্থীদের। তারা সুস্থ পৃথিবীতে আবার সেই চিরচেনা বিদ্যাপীঠে ফিরতে চায়। ভালবাসায় রাঙানো কাছের মানুষগুলোর সাথে আড্ডা দিতে চায়। আবারো মধ্য রাতে গিটার নিয়ে গানের ভুবনে মত্ত থাকতে চায়। কবে ফিরবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই, শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছে শিক্ষার্থীরা।
এমনই নিজ ক্যাম্পাসে ফিরতে অপেক্ষার কথা বলেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীরা।
ভালবাসার ক্যাম্পাসে ফেরার আকুতি জানিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু বলেন, আজ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যার সিন্ধু ছেঁচে মুক্ত আহরণের প্রান্তকর চেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা ছিল, সেই মুহূর্তে আমরা ঘরবন্দি।
প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির সবটুকুই আজ প্রতিক্ষায়। মিনতি জানাই, হে প্রকৃতি সুস্থ হও, মধ্যবিত্তদের স্বপ্নপূরণের এখনো যে রয়ে গেছে বাঁকি! হে প্রিয় ক্যাম্পাসের ১৭৫ একর তোমার বুকে টেনে আমায় আবারো আলিঙ্গন করো। তোমার সবুজ খাতার পাতায় আবারো আঁচড় কেটে আঁকিবুঁকির সুযোগ করে দাও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাহিনুর রহমান বলেন, করোনার এই ভয়াল থাবা না থাকলে আজ হয়তো টিএসসি হয়ে উঠতো হাজারো স্বপ্নবাজদের মিলনস্থল।
কার্জনের সবুজ ঘাস, শহীদুল্লাহর পুকুর পাড়, কলাভবনের সামনের বটতলা আর এফবিএস-এর সামনের সবুজ চত্বর হয়ে উঠতো জ্ঞান অন্বেষণকারীদের ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া হাজারো আড্ডার সাক্ষী। প্রতিটি সকাল শুরু হতো লাইব্রেরির সামনে রাখা সারি সারি ব্যাগের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবতা আজ প্রতীক্ষায় রূপ নিয়েছে। অব্যক্ত মনের প্রার্থনা একটাই- সুস্থ হোক বসুমতী, সুস্থ হোক বঙ্গ জননী। হাজারো তরুণ তরুণীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠুক ৬০০ একরের প্রিয় ক্যাম্পাস, টগবগিয়ে চলুক স্বপ্নের লালবাস।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম শান্ত বলেন, চিরচেনা সেই বিদ্যাপীঠ আর ভালবাসার মানুষগুলোকে দেখিনা অনেকদিন।
কিন্তু আজ ঘরে বসে সোনালী অতীতগুলো মনে করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। প্রতিক্ষণেই হৃদয়ে একটা ভয় জাগ্রত করে, প্রিয়জনদের সাথে আবার দেখা হবে কিনা! ক্যাম্পাসে ফিরে ক্লাসে আবার সবাইকে পাবো কিনা! সেই রঙিন ও উৎসবমুখর দিন ফিরে পাবো কিনা। ঘরবন্দি আর কতদিন থাকা যায়। এখন সুদিনের অপক্ষোর প্রহর গুনছি। প্রার্থনা করি পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। সবাই সুস্থ থাকুক।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান বলেন, একটি অপরিচিত ক্যাম্পাস যেন জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। এখন অপেক্ষার বিশাল পাহাড় যেন কোনভাবেই শেষ হচ্ছে না। প্রতিটা মুহূর্তে যেনো বিশাল স্মৃতির মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। আর মুহূর্তে মুহূর্তে হৃদয়ে নাড়া দেয় প্রাণের ক্যাম্পাসে ফেরার আকুলতা।