রপ্তানি ক্ষেত্রে করোনা সহায়তার সময় বৃদ্ধি
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২০
করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকদের জন্য ঘোষিত নীতি সহায়তার মেয়াদ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লকডাউনে বন্ধ ছিল ব্যবসা। অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ব বাণিজ্য।
এতে করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন রপ্তানিকারকরা। এমন অবস্থায় বিশ্ব বাজারে রপ্তানিমুখী শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বেশ কিছু নীতিসহায়তা ঘোষণা করা হয়।
নীতিসহায়তা মধ্যে রপ্তানির অর্থ দেশে আনা ও আমদানি দায় পরিশোধের মেয়াদ ৬০ দিন করে বাড়ানো হয়েছে। ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির আওতায় স্বল্পমেয়াদি সাপ্লায়ার্স ও বায়ার্স ক্রেডিটের মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৮০ দিন। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে ৯০ দিন। এসব সুবিধা চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু মহামারি পরিস্থিতি আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা বাড়ানো এবং রপ্তানিকারকদের সহযোগিতা করতে নীতিসহায়তার আওতায় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের সময় ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে গত ১৯ মার্চের জারি করা নীতি সহায়তার সময়সীমা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিল।
গত ১৯ মার্চের জারি করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘বৈদেশিক মুদ্রানীতি’ বিভাগের সার্কুলারে বলা হয়, রপ্তানি পণ্যের মূল্য দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য চার মাস সময় পান রপ্তানিকারকরা। পণ্য জাহাজীকরণের দিন থেকে এ সময় গণনা শুরু হয়। এখন থেকে রপ্তানিকারকরা অর্থ প্রত্যাবাসনের জন্য চার মাসের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৬০ দিন সময় পাবেন। তবে এ ধরনের মেয়াদ বাড়ানোর পর ব্যাংকগুলো ততক্ষণাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন বিভাগে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়কে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের নাম, ইক্সপি নম্বরে, অর্থ পরিশোধের প্রত্যাশিত তারিখ, মেয়াদ বাড়ানোর কারণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে।
রপ্তানি বিল প্রত্যাবাসনের মতো আমদানির ক্ষেত্রেও পণ্য দেশে পৌঁছানো ও মূল্য পরিশোধের জন্য চার মাস সময় পান আমদানিকারকরা। এক্ষেত্রেও বিল অব এন্ট্রির দিন থেকে চার মাসের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। রপ্তানির মতোই আমদানিকারকদের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানাতে হবে।
ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির আওতায় স্বল্পমেয়াদি সাপ্লায়ার্স ও বায়ার্স ক্রেডিটের মেয়াদ হলো ১৮০ দিন। বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ মেয়াদ আরও ১৮০ দিন বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকদের ওপর গ্রহণযোগ্য সুদহার আরোপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদ হয় ৯০ দিন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রতিনিয়ত দেশের তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আদেশ বাতিল হচ্ছে। ফলে ইডিএফ তহবিল থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের সময় ১৮০ দিন পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া ব্যাংকগুলো রপ্তানি বিলে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট দিতে পারত। এখন থেকে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই ১০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিতে পারবে।