ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফুটবলার রিপন এখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী

সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর
🕐 ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২০

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল ক্লাব ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবে অনুশীলন করা বাংলাদেশের ফুটবলার ফরিদপুরের ছেলে রিপন এখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন ফরিদপুরের একটি সরকারি অফিসে। বাফুফের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এমন অবস্থা বলে মনে করছেন ফুটবলের সঙ্গে জড়িত বিশিষ্টজনরা।

ফরিদপুরের ছেলে রিপন কুমার দাস ২০১২ সালে এয়ারটেলের রাইজিং স্টার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১২ জনের একটি টিমের সঙ্গে নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবে অনুশীলন করার জন্য বিদেশে যান। এরপর সেখানে ১০ দিনের অনুশীলন শেষ করে ফিরে আসেন দেশে।

দেশে আসার পর বাফুফের তদারকির অভাবে তাকে ফিরে আসতে হয় নিজ জেলায় ফরিদপুরে। ফরিদপুরে আসার পরে সংসারের অভাব অনটনের কারণে তাকে বেছে নিতে হয় বাবার ফরিদপুর সড়ক বিভাগে মাষ্টার রোলের পরিচ্ছন্নতার কাজ। গত কয়েক বছর ধরে এই কাজ করছেন ফরিদপুর সড়ক বিভাগে তিনি। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে তিনি সেখানে গিয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য। রিপন একই সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন ফুটবলের অনুশীলন। সাবেক ফুটবলার ও জেলা টিমের কোচ আবুল কাশেম ভোলার তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন চলছে বিকেলে অনুশীলন ষ্টেডিয়ামের মাঠে। এখনো তার দুর্নিবার ইচ্ছা তিনি হবেন দেশ সেরা ফুটবলার। তবে দিন যত যাচ্ছে সংসারের অভাব অনটনের কারণে দিনকে দিন ফিকে হয়ে যাচ্ছে সেই আকাশ ছোয়া স্বপ্ন প্রত্যাশা।

তার মা পান্তা দাস বলেন, আমার দুই ছেলে রিপন সবার বড়। ছোট ছেলে তপন এখনও কিছু করে না। রিপন এতবড় একজন ফুটবলার শুধু সংসারের অভাবের কারণে বেছে নিতে হয়েছে ওর বাবার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ। এতে আমাদের খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। রিপন যদি আয় রোজগার না করতে পারে তাহলে আমাদের যে না খেয়ে থাকতে হবে। তিনি বলেন, ওর বাবা অসুস্থ থাকায় ওকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। 

সাবেক ফুটবলার, ডিএফএ ফরিদপুরের সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা টিমের কোচ আবুল কাশেম ভোলা জানান, রিপনের মতো ফুটবলার তৈরি হয় খুব কম। বাফুফে যদি সঠিকভাবে ভূমিকা নিত তাহলে তাকে এভাবে ঝড়ে পড়তে হতো না। এখনো তার অনেক সুযোগ রয়েছে তাকে বাফুফে কাজে লাগাবে সেই আশা তিনি করেন।

ফুটবলার রিপন কুমার দাস বলেন, আমার আর্থিক অভাব অনটনের সংসারের কারণে আমি এখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বাবা-মায়ের কষ্টের কথা চিন্তা করে কাজ করছি। তবে এমন ভাবে কাজ করতে হবে সেটা কখনো চিন্তায় ছিল না। আমি হতে চেয়েছিলাম বড় ফুটবলার। এতে সংসারের দৈন্যদশা কাটবে কিন্তু তা হয়নি। বাফুফে যদি আমাদের ব্যাপারে ভূমিকা নিতো তাহলে হয়তো এমন হতে হতো না আজ। 

ফুটবলের সঙ্গে জড়িতরা মনে করেন রিপনকে মাঠে ফিরিয়ে এনে আবার তাকে খেলার ব্যাপারে সরকার ও বাফুফে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই প্রত্যাশা সকলের।

 

 
Electronic Paper