ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিপন্ন হতে দেবেন না

সম্পাদকীয়
🕐 ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০

ছোট ব্যবসায়ীদের এখন দুর্দিন। অনেকেই পুঁজি হারাতে বসেছেন। ব্যবসায় বিনিয়োগ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছেন ধীরে ধীরে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় সব শ্রেণির মানুষেরই জীবন-জীবিকা, দিনযাপনের হুমকিতে পড়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই অভিন্ন চিত্র। গতকাল এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে খোলা কাগজে। তাতে বলা হয় হাফিজ ও সৌরভ নামক দুই বন্ধুর উদ্যোগের কথা।

দুজন মিলে সঞ্চয় করে এক বছর আগে কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডের একটি মার্কেটে দুইটি দোকান ভাড়া নেন। শুরু করেন কফি হাউস ও স্ন্যাকসের ব্যবসা। শুরুতেই দোকানের সিকিউরিটি মানি, এক মাসের অগ্রিম ঘর ভাড়া এবং দোকান সাজাতে বেশ কিছু অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। এরপর সবকিছু গুছিয়ে শুরু করেন ক্ষুদ্র ব্যবসা।

ছোট কফি হাউস ও স্ন্যাকসের দোকান থেকে তাদের স্বপ্ন বাড়তে থাকে। এক বছরে কর্মসংস্থান করেছেন বেশ কিছু মানুষের। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে গড়ে তুলেছিলেন ‘ফ্রেন্ডস ফাস্ট ফুড কর্নার’। এই আয় থেকেই বাড়ছিল তাদের এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। নিজেরা কাজ করার পাশাপাশি আরও দুই ব্যক্তিকে কাজের জায়গাও করে দিয়েছিলেন তাদের ছোট প্রতিষ্ঠানে। স্বল্প সময়ে অনেক চড়াই-উৎরাই পার করলেও তাদের ব্যবসা গোটানোর চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু করোনা তাদের ব্যবসায় আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেয়নি। টানা সাধারণ ছুটি ও লকডাউনে বকেয়া হয়েছে চার মাসের দোকান ভাড়া। অন্যদিকে জমেছে বিদ্যুৎ বিল। হাফিজ বলেন, হঠাৎ করে সবকিছু এমন পরিবর্তন হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি। উদ্যোক্তা হয়েও টানা সময় ধরে বেকার জীবনযাপন করছি।

মহামারির প্রাদুর্ভাবে চরম সংকটে পড়েছেন এমন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। যারা ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন। টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ও পরবর্তী সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের লকডাউন সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখা এবং ছুটি শেষে সীমিত আকারে খুললেও খুব একটা লাভবান হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা নেই, তাই লেনদেনও কম। উপরন্তু পারিবারিক খরচ মেটাতে জমানো অর্থ খরচ করে চলেছেন এতদিন।

দেনায় এখন অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজছেন। এভাবে চলতে থাকলে অর্ধলক্ষ শ্রমিক কর্মহীন হতে পারে বলে ধারণা বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মানুষ পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। না হলে দারিদ্র্য বাড়বে। আর যারা আবারও ব্যবসা করতে চান কিন্তু পুঁজি নেই, তাদের জন্যও সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

কুষ্টিয়ার মোট ব্যবসায়ীর ৯০ ভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পরিসংখ্যান অফিসের সর্বশেষ তথ্যনুযায়ী কুষ্টিয়ায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫ হাজার ৯৫৯টি। সবাই কমবেশি বিভিন্নভাবে ঋণগ্রস্ত। সেই সঙ্গে গত দুই বছরে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত দোকান ভাড়া। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর জেলা প্রশাসন ও কুষ্টিয়া পৌরসভা শহরের দোকান কর্মচারীদের তালিকা সংগ্রহ করলেও তা কোনো কাজে আসেনি। এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা বা সরকারি প্রণোদনা পাননি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে তাদের পাশে থাকতে হবে। বাড়াতে হবে সহযোগিতার হাত। সংশ্লিষ্টরা এই বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper