ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কোরবানির চামড়া নিয়ে শঙ্কা কাটুক

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২০

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গবাদিপশুর চামড়া বিকিকিনি শুধু ট্যানারি ব্যবসায়ী কিংবা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যই জড়িত নয়, এর সঙ্গে রয়েছে দুস্থ-এতিমসহ প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যও। রয়েছে অর্থনীতির বড় একটি যোগসূত্র। কোনো কোনো বছর চামড়া শিল্পে কেলেঙ্কারি ঘটে। এতে বঞ্চিত হয় সংশ্লিষ্টরা। অর্থনীতিতেও দেখা দেয় মন্দাত্ব।

দাম অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় গত বছর কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে নজিরবিহীন সংকট সৃষ্টি হয়। চামড়া রাস্তায় ফেলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অনেক চামড়া রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৩০০-৪০০ টাকায় কিনেও সেই চামড়া ৫০ টাকা বিক্রি করতে পারেনি। এবার করোনার কারণে চামড়া নিয়ে সেই সংকট আরও বাড়ার শঙ্কা করছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি চামড়া শিল্প রক্ষায় গঠিত টাস্কফোর্স সভায় এসব শঙ্কার কথা জানান তারা।

এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকাল খোলা কাগজে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোরবানি পশুর চামড়ার সংকট উত্তরণ এবং চামড়া শিল্পকে রক্ষায় গত বছর অক্টোবরে সরকারের চারটি মন্ত্রণালয় ও বেশ কয়েকটি বিভাগের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় এবারও কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে শঙ্কা করেন সরকারের খোদ তিনজন মন্ত্রী ও এ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা। সভায় একগুচ্ছ প্রস্তাব ও কিছু সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে ছিল ঈদের এক মাস আগে চামড়া দাম নির্ধারণ করে ব্যাপকভাবে প্রচার, এক মাস আগে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের চামড়া কেনার প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় করা, প্রয়োজনে সরকার বাজার থেকে অবিক্রীত চামড়া কিনে গুদামজাত করা এবং কাঁচা চামড়া রপ্তানি করা যায় কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

ঈদের বাকি আছে অল্প কয়েক দিন। কিন্তু সেই সভার একটি সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। তার মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হলেও কবে নাগাদ সেই টাকা পাবেন বা কারা পাবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন ট্যানারি মালিকরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ডেপুটি সেক্রেটারি মিজানুর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে আরও ভয়াবহ সংকট হবে।

কারণ টাস্কফোর্সের সভায় সেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই ট্যানারিগুলো সাভারে নিয়ে যাওয়া, মালিকদের জমির দলিল না দেওয়া, জমি ও কারখানার টাকা পরিশোধ করে মালিকদের নগদ টাকার সংকট, ব্যাংকগুলো ঋণ না দেওয়া, বিশ্বব্যাপী চামড়ার দাম কমে যাওয়া। সাভারে যাওয়ার পরই ট্যানারি মালিকরা ঋণখেলাপি হতে শুরু করেছে। এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।

মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা যথাসময়ে চামড়া কিনতে অনাগ্রহী হয় তবে বাজারে অতিরিক্ত চামড়া সরকারিভাবে কিনে দুই তিন মাস গুদামজাত করা হবে। এছাড়াও সারা দেশে মসজিদে ইমাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রধানদের চামড়া নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চামড়া নিয়ে এবারও যেন অঘটন না ঘটে সে বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper