‘আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছিল’
ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৯, ২০২০
ক্রিকেটে শাহরিয়ার নাফীসের শুরুটা ছিল অসাধারণ। সম্ভাবনায় ক্রিকেটার হিসেবে আবিভূত হয়েছিলেন। ত্বরিত জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া, জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া এবং টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম নেতৃত্ব দেওয়া হয় তার। কিন্তু বাকি সময়টা তিনি মসৃণভাবে এগোতে পারেননি। তার এই ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ছন্দপতনে তিনি তার প্রতি অবিচার এবং অন্যায় করা হয়েছে বলে জানান। এ নিয়ে কথা হতে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘যে কোনো খেলোয়াড়ের জীবনেই এরকম অবস্থা আসতে পারে। তবে আমি মনে করি, এই ব্যাপারে আমি কিছুটা অন্যায়ের শিকার হয়েছি। ২০০৭ বিশ্বকাপে আমি ছয়টা ম্যাচ খেলেছিলাম। ২০০৬ সালে এক হাজার রান করেছিলাম, তাই কেউ যদি মনে করে একজন ক্রিকেটার বছরে এক হাজার রান করবে তাহলে তো আর কিছু বলার নেই।
এখানে আমি মনে করি, আমার সঙ্গে খুব অবিবেচকের মতো কাজ করা হয়েছে। কারণ, ২০০৫ সালে ও ২০০৬ সালে ধারাবাহিক ভালো খেলার পরে একটা টুর্নামেন্টে খারাপ খেললে তার অর্থ এই নয় যে, আপনি তাকে ছুড়ে ফেলে দেবেন। এটা আমার সঙ্গে হয়েছে। আশি আশা করব, এরকমটা যেন আর অন্য কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে করা না হয়।’
২০০৬ সালে যখন টি-টুয়েন্টি খেলা শুরু করল বাংলাদেশ, এই সংস্করণে প্রথম টাইগার অধিনায়ক হয়েছিলেন নাফীস। কিন্তু পরের বছর টি-টুয়েন্টি বিশ^কাপের প্রাথমিক দলেও আর ডাকা হয়নি তাকে। এমন অতীত স্মরণ করে খুব কষ্টে মাখা কণ্ঠে নাফীস বলেন, ২০০৭ বিশ^কাপের পরে ভারত, ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ ছিল। আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হলো। তারপর টি-টুয়েন্টি বিশ^কাপের প্রাথমিক দলেও আমাকে রাখা হলো না। আমি কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক ছিলাম। ২০০৮ সালের শুরুতেই আমাকে চুক্তি থেকেই বাদ দেওয়া হলো। এটা যারা করেছিলেন তারা ভালো উত্তর পারবেন কী চিন্তা করে করেছিলেন। তবে আমি মনে করি, আমার সঙ্গে চরম অন্যায় করা হয়েছে।
আইসিসির এক সময়ের উদীয়মান ক্রিকেটারের তালিকায় থাকা শাহরিয়ার নাফীসের প্রতিভা এভাবেই তলিয়ে যেতে থাকে। তার মতে ক্রিকেটারদের ধারাবাহিক সুযোগ দিলে তারা দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। যেমনি সুযোগগুলো বর্তমান জাতীয় দলের অনেককেই দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। নাফীস পঞ্চপা-বের উদাহরণ টেনেছেন এখানে। এতে তারা নিজেদের মতো করে খেলার সুযোগ পেয়েছেন আজ বাংলাদেশকে বিশ^দরবারে উপস্থাপন করতে পারছেন। তার মতে সকল প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের এই সুযোগ দেওয়া উচিত।
নাফীস বলেন, দেখুন মাশরাফি ভাই অনেক বছর চোটে পড়েছেন। এক-দেড় বছর পর আবার ফিরেছেন। আমরা উনার ওপার বিশ্বাস রেখেছি বলেই আজ উনি বাংলাদেশকে এতদূল নিয়ে আসতে পেরেছেন। সাকিব, তামিম, মুশফিক মাহমুদ উল্লাহরাও কিন্তু আস্তে আস্তে শুরু করে আজ এই পর্যায়ে এসেছে।
তারা বাংলাদেশকে আজ এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যে বাংলাদেশ আজ একটা বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে ক্রিকেটে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।
একটা খেলোয়াড় কিন্তু তার প্রতিভা আছে দেখেই জাতীয় দলে সুযোগ পান। তাকে যদি এভাবে সমর্থন দেওয়া হয়, তাহলে নিঃশেষে বাংলাদেশেই নাম্বার ওয়ান হবে। তাই আমি বলব, আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছিল।