বন্ধুরূপে আবির্ভূত কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ
সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ
🕐 ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৯, ২০২০
করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে বন্ধুরূপে আবির্ভূত হয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা। আর এ কাজে নেমে রীতিমতো অসহায় মানুষের ত্রাতারূপে আবির্ভূত হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। যে কোনো সমস্যায় এখন সবার আগে কাছে পাওয়া যাচ্ছে পুলিশকেই।
জেলা পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বলেন, করোনা যুদ্ধে আমরা সবসময় আছি এবং সবাইকে নিয়ে যেন এ যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং করব। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পুলিশ বুক পেতে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, আত্মোৎসর্গ করেছেন। এবারও করোনা মহামারি যুদ্ধে শামিল হয়েছে পুলিশ। যতদিন করোনা থাকবে ততদিন পুলিশ বীরত্বের সঙ্গে এই যুদ্ধের মোকাবেলা করবে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জে কে খাদ্য সংকটে রয়েছেন খোঁজ নিয়ে খাবার নিয়ে হাজির হওয়া, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, করোনা সন্দেহে যখন প্রতিবেশীরাও মৃত ব্যক্তির কাছে ভিড়ছে না তখন সেই পুলিশই দাফন কাফন করাসহ পাশে দাঁড়িয়েছেন পরম মমতায়, রাস্তায় রাস্তায় ভাসমান মানুষের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেওয়া- কী না করছেন পুলিশ সদস্যরা! করোনাভাইরাসকে ঘিরে জাতির এই মহাদুর্যোগে সেই পুলিশ কোনোরকম প্রকল্প ছাড়া নিজে নিজেই আমূল বদলে যাচ্ছে, গড়ে তুলছে আলাদা ভাবমূর্তি। হয়েছে জনগণের বন্ধু। প্রমাণ করছে পুলিশই জনতা এবং জনতাই পুলিশ।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ কার্যালয় সূত্র জানায়, ২১ সদস্যের কুইক রেসপন্স টিমে ৫ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল সাপোর্ট টিম রয়েছে। কুইক রেসপন্স টিম ২টি শিফটে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করবে। সার্বক্ষণিক একটি এ্যাম্বুলেন্স এবং ৩টি গাড়ি রেসপন্স টিমের সহায়তার জন্য দেওয়া হয়েছে।
করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর দিকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ের মাধ্যমে লকডাউন নিশ্চিত করা, হোম কোয়ারান্টিন নিশ্চিত করা, বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারান্টিন, যে কয়েকটি জায়গায় আইসোলেশন সেন্টার হয়েছিল সে সমস্ত জায়গায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, তৃতীয় লিঙ্গ, বেদে পল্লী, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান, ঈদে লুঙ্গি শাড়ি, সেমাইসহ বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, পুলিশ বাহিনীতে যারা আছে তারা যেন তাদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে, প্রতিটি থানায় স্প্রে মেশিন, থার্মাল গান, বেসিন স্থাপন, জীবাণুনাশক ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে এবং ৫টি জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়েছে। সদস্যদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য জিংকসহ বিভিন্ন ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
জানা যায়, জেলা পুলিশের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ জন। পুরুষ ৫১ জন, নারী ৫ জন। যার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৪৮ জন। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮৭ জনের।