ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পাঠকের চিঠি

সীমান্ত হত্যা কবে বন্ধ হবে

রাজিমুল হক রাকিব
🕐 ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৬, ২০২০

মহান মুক্তিযুদ্ধের সূত্র ধরে ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র। কিন্তু বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে আমরা তার উল্টো চিত্র দেখতে পাই। দুই দেশের মাঝে বন্ধুত্বের বসন্তকাল চলাকালেই এটি হয়ে উঠেছে পৃথিবীর বিপজ্জনক সীমান্তগুলোর একটি। এই সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের নির্যাতন ও হত্যা বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এক দেশ থেকে অন্য দেশে অবৈধ সীমান্ত পার হওয়াটা নতুন কোনো বিষয় না। আর্থিকভাবে সামর্থ্যহীন অনেকেই একটু উন্নত জীবনের খোঁজে নতুন স্বপ্ন নিয়ে অবৈধভাবে পাড়ি জমায় অন্য দেশে। কেউ কেউ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছালেও অনেকের জন্য তা কাল হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে ৪০৯৬ কিলোমিটারের একটি সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তবর্তী মানুষগুলা জীবন ও জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপায়ে সীমান্ত পার হয়। অনেকেই সাময়িক কাজের খোঁজে সীমান্ত পাড়ি দেয়। আবার যারা সীমান্ত শূন্যরেখার নিকটে কৃষিকাজ করে বিভিন্ন প্রযোজনে তাদেরও সীমান্ত পার হতে হয়। এটা যে শুধু বাংলাদেশি নাগরিকরা করে তা নয়। ভারতীয়রাও করে থাকে। দুই দেশের নাগরিক অবৈধ সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করলেও অধিকাংশ নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয় বাঙালিরা।

মূলত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাজ হল সীমান্তে অবৈধ মানবপাচার ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু এসব নিয়ন্ত্রণের নামে বিএসএফ প্রায়শই আগ্রাসী আচরণ করে থাকে। ২০২০ সালে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে ২১ জন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছে। ২০১১ সালে কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ফেলানীর কাটাতারে ঝুলন্ত লাশ বাঙালির হৃদয়কে এখনো কম্পিত করে। হত্যার ৯ বছর পরও আমরা সুবিচার পাইনি।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিজিবি এবং বিএসএফের মাঝে প্রায়ই আলোচনা দেখা যায়। ভারতের পক্ষ থেকে বারবার সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা তার উল্টো। বিএসএফ বরং আগের চেয়ে আরো বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠছে। সীমান্ত হত্যার পর বিএসএফ তাদের আত্মরক্ষার যুক্তি দেখায় যা বাস্তবতায় কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়ার প্রধান কারণ হল এসব হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বারবার আলোচনা করলেও হত্যা বন্ধের জন্য তাদের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করতে না পারা। তবে সীমান্ত হত্যা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার যদি ভূ-রাজনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে না পারে তাহলে অবস্থা অপরিবর্তিত রয়ে যাবে।

রাজিমুল হক রাকিব, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

 

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper