তিল চাষে সরব কৃষক
মোশাররফ হোসেন, নীলফামারী
🕐 ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২০
কৃষি থেকে হারিয়ে যাওয়া বহুগুণের অধিকারী তিল চাষে এখন সরব নীলফামারীর কৃষক। অন্য ফসলের মাঝামাঝি সময়ে ফেলে রাখা জমিতে তিল চাষ করে বাড়তি আয় করছেন তারা। কৃষকরা বলছেন, ফসলের আচ্ছাদনে মাটির রস ও জৈব পদার্থ সংরক্ষিত থাকায় মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এতে কম খরছে পরবর্তী ফসলের উৎপাদন বেশি হয়।
সরিষার তুলনায় খাবার তেল হিসেবে তিলের তেল বেশি স্বাস্থ্যকর। তিলের নাড়–, খাজা জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার। প্রসাধনী শিল্পেও তিলের চাহিদা প্রচুর। পাশপাশি তিলের রয়েছে পুষ্টি এবং ঔষধী গুণ। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার ভিড়ে ক্রমাগত হারিয়ে যেতে শুরু করে তিল। বহুগুণের অধিকারী ফসলটির পুরনো ঐতিহ্য ফেরাতে উদ্যোগে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন এসব কৃষক।
ইউনিয়নের দুবাছরি গ্রামের কৃষক মোতালেব উদ্দিন তালুকদার এবার তিল আবাদ করেছেন দুই বিঘা জমিতে। অনেকে তিল চাষ ছেড়ে দিলেও তিনি সেটি ধরে রেখেছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার দেখাদেখি ওই গ্রামে বেড়েছে তিলের আবাদ।
মোতালেব উদ্দিন বলেন, তিল চাষ করলে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। রায়সনিক সার ও জমি নিড়ানির প্রয়েজন হয় না। কম পরিশ্রম এবং স্বল্প খরছে প্রতি বিঘায় পাঁচ থেকে ছয় মণ ফলন পাওয়া যায়। এক বিঘা জমির ফসল বিক্রি করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করা যায়।
একই গ্রামের অপর কৃষক আশরাফুল ইসলাম গত তিন বছর ধরে তিলের আবাদ করছেন এক বিঘা জমিতে। তিনি বলেন, এই তিন বছরে আমার জমির উর্বরা শক্তি বেড়েছে। তিল চাষের পর অন্য ফসলের আবাদ ভালো হচ্ছে। তিল গাছের পাতা পড়ে জমির উর্বরা শক্তি অনেক বাড়ে। আমন মৌসুমে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেই ভালো ফসল পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান ম-ল বলেন, এ জেলার মাটিতে পাঁচ ভাগ জৈব পদার্থ থাকার কথা থাকলেও তা এক ভাগেরও কম রয়েছে। তিল চাষ মাটির জৈব ঘাটতি পূরণে বড় ভূমিকা রাখছে। এ অঞ্চলে তিল চাষের প্রচলন মাটি ও কৃষকের জন্য অত্যন্ত শুভ।
তিনি জানান, জেলায় এবার সাত হেক্টর জমিতে তিল উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত টন। সারা দেশে এবার খরিপ মৌসুমে তিল উৎপদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার টন।