বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ০৪, ২০২০
কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে নির্যাতনের পর তার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। গত আটদিন ধরে রাজপথে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। অন্তত তিন বিক্ষোভকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ পাঁচ পুলিশ। অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়েছে বিভিন্ন শহরে। এই হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল বুধবার ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সসহ অনেক দেশেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে ৪০টিরও বেশি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করেই বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এদিকে জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় অংশ নিতে টেক্সাস রাজ্যের হোস্টনে জড়ো হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে সেখানে।
ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে দুই হাজারের বেশি মানুষ সিটি হলের দিকে পদযাত্রা করছে। পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়াতেও সিটি হলের দিকে বিক্ষোভকারীদের পদযাত্রা কর্মসূচি চলছে।
টেনেসির ন্যাশভিলে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে নিজেদের সুরক্ষা উপকরণ নামিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের।
বিভিন্ন শহরের এসব বিক্ষোভে লাখ লাখ মার্কিন নাগরিক যোগ দিয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে। কারফিউ অমান্য করেও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। অন্যতম বড় বিক্ষোভ হয়েছে ফ্লয়েডের নিজ শহর টেক্সাসের হাউসটনে। ওই বিক্ষোভে তার স্বজনরাও যোগ দেয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস অভিমুখে রওনা দেওয়া বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে মার্কিন রাজধানীর রাজপথে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। একই সময়ে আকাশে হেলিকপ্টারও উড়তে দেখা যায়। রাতের বেলার কারফিউ অমান্য করে নিইইয়র্কের ম্যানহাটনে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে কারফিউয়ের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলস, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা ও সিয়াটলে। তবে তুলনামূলকভাবে শান্ত হয়ে এসেছে ফ্লয়েড হত্যাকা-ের ঘটনাস্থল মিনিয়াপলিস শহর।
লস অ্যাঞ্জেলসে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। লোয়া এবং জর্জিয়ায় পুলিশ সদস্যদের হাঁটু গেড়ে বসে বিক্ষোভকারীদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
এদিকে গতকাল বর্ণবাদী বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই খবর জানিয়েছে।
বুধবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা আশা করি সব ধরনের বর্ণবাদ নিরসন এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক কনভেনশনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
গত ২৫ মে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের। গ্রেফতারের পর পুলিশের নির্যাতনে মারা যান তিনি। এরপরই তাকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তা থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত।