ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চিংড়ি চাষিদের পাশে থাকুন

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জুন ০৩, ২০২০

করোনাভাইরাসের দৃশ্যমান প্রকোপ দেখা যাচ্ছে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সাদাসোনা খ্যাত বাগেরহাটসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে চিংড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ চাষি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। চিংড়ি শিল্প অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব। চাষি ও চলতি বছরে চিংড়ি উৎপাদনের মৌসুম শুরুর তিন মাস আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আবহাওয়াজনিত কারণে এক রাতেই প্রায় ৫০ কোটি টাকার গলদা চিংড়ি মারা যায়। এর কয়েক দিন পরে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানে চিংড়ি শিল্পে। এ রেশ কাটতে না কাটতেই বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসে উৎপাদিত চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এসব বিষয় উঠে আসে গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

ব্যাপক লোকসানে পড়ে চাষি ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে নতুন করে ঘেরে চিংড়ির পোনা ছাড়তে না পারায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন চাষিরা। ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। করোনার কারণে সব সেক্টরের সঙ্গে চিংড়ি সেক্টরও হুমকির মুখে পড়েছে। মৎস্য চাষিরা জানান, চিংড়ি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। কিন্তু এ বছর যখন চিংড়ি মাছ বিক্রির সময় তখনই করোনার প্রভাবে মাছ ক্রয় বন্ধ রয়েছে।

আবার ঘেরে পোনা ছাড়ারও সময় এসেছে। এখন পানিও নেই। ঘেরের বিক্রি উপযুক্ত মাছের দাম নেই, পোনার দাম আকাশচুম্বী। কী যে হবে। করোনার প্রভাবে বিদেশে মাছ রপ্তানি বন্ধ। দেশের বাজারেও মাছের তেমন ক্রেতা নেই। কারণ বাগেরহাট থেকে অন্য কোথাও মাছ পাঠানোর সুব্যবস্থা নেই বর্তমানে। এক ধরনের বেকার অবস্থায় রয়েছেন পেশাজীবীরা। দ্রুত দেশ ও বিদেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দেখা দেবে বড় সংকট।

বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের চিংড়ি চাষি মহিবুল্লাহ মিন্টু বলেন, আমার ১২ শ’বিঘা জমির ৩টি ঘেরে গেল বছর প্রায় ৯০ লাখ বাগদার পোনা ছেড়েছিলাম। এ বছর মাত্র ১৫ লাখ পোনা ছাড়া হয়েছে। এবার পোনা সংকটের কারণে গত বছরের তুলনায় হাজার প্রতি ৬ শ’ টাকা বেশি দিয়ে পোনা কিনতে হচ্ছে। যার ফলে চাহিদা অনুযায়ী পোনা ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না।

এছাড়া রপ্তানি বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারে কম মূল্যে বাগদা চিংড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। বাগেরহাট জেলা চিংড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, গেল দুই-তিন বছর বৈরি আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে জেলায় মোট চিংড়ির উৎপাদন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে কোভিড-১৯ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো দেখা দিয়েছে চাষিদের কাছে।

আম্পান ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় প্রায় আড়াই থেকে তিনশ’ কোটি বাগদার পোনা ও দেড় থেকে দুই কোটি গলদা চিংড়ি পোনার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এবছর নানা কারণে তিন ভাগের একভাগ পোনাও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে চিংড়ি চাষি ও ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলছে এখন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থেকে বরাভয় দেওয়া, সংকট উত্তরণে সহায়তা করা সময়ের দাবি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper