কর্মস্থলে সুষ্ঠু পরিবেশ কাম্য
সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ০২, ২০২০
সরকার সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে অনেককে। ইতোমধ্যে গণপরিবহনও নিয়ম মেনে চালানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঝুঁকির পরিমাণ বেড়েছে আরও। করোনাভাইরাসের মহামারীতে একদিকে মৃত্যুহার বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্ত। দেশজুড়ে সাধারণ বন্ধ থাকায় আয়-রোজগার, উৎপাদন, বিপণন ও ভোগ হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে শর্ত সাপেক্ষে ও সীমিত পরিসরে সব খুলে দেওয়া হয়েছে।
এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। সতর্ক না হলে, বিপর্যয় রোধে উদ্যোগ জোরালো না হলে সার্বিক পরিস্থিতি আরও বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে মন্তব্য করছেন অর্থনীতিবিদরা। করোনাকালীন কর্মস্থলের বিষয় উঠে এসেছে গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
দুই মাসের অধিক সময় বন্ধ থাকার কারণে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। বন্ধ হয়ে গেছে উৎপাদন, বিপণন আমদানি ও রপ্তানি। কর্ম হারিয়েছে শ্রমজীবী মানুষ। যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল এক জনপদ থেকে আরেক জনপদ। এতে মানুষের জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও যোগযোগ বিচ্ছিন্ন, অফিস-আদালত বন্ধ থাকা ও মানুষের আয়-রোজগার না থাকার কারণে কোনো উদ্যোগ কাজে আসছিল না।
দিন দিন করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনাহারি মানুষের সংখ্যাও বাড়ছিল। অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছিল। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ ও পরিবহন নির্ভর শ্রমজীবী মানুষ কর্মস্থল খুলে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবি ওঠে শিল্প-বণিক সমিতিগুলো থেকেও।
করোনাআক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিদিন ২০ জনের অধিক মৃত্যু হচ্ছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে দুই হাজারের অধিক মানুষ। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই গত রোববার থেকে খুলে দেওয়া হল সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, গণপরিবহন, দূরপাল্লার যানবাহন। এ সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকের মৃত্যু ঘটে। এরই মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা সংক্রমণ রোধে ব্যক্তিগত রক্ষা সামগ্রী পরিধান করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে সব কিছু খুলে দেওয়া হয়। এসব কিছু খুলে দেওয়ার কারণে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
তবে সংক্রমণের ঝুঁকি কম-এমন কার্যক্রম সীমিত খোলার মত দেন বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা। এ বিষয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে সারা দেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। স্পন্দন থেমে গেছে অর্থনীতির। অর্থনীতির প্রাণ ফেরাতে জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ও কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রম সীমিত ও করোনা সংক্রমণ রোধে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক খুলে দেওয়া উচিত।
অর্থনীতিকে সচল করতে অচলাবস্থার অবসান ছাড়া কোনো উপায় নেই, কলকারখানা বিপণিকেন্দ্র ও পরিবহন খুলে দেওয়া ছাড়া উপায়। কিন্তু সময় ও লকডাউন প্রত্যাহারের ব্যাপকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, লকডাউন পুরোপুরি প্রত্যাহারের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আবার বড় ধরনের লকডাউন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। অর্থনীতি গতিশীল রাখার স্বার্থে কর্মস্থল খোলা না রাখারও বিকল্প নেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সুষ্ঠু পরিবেশ রাখা হবে। এটা নিশ্চিত করা জরুরি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228