স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে গণপরিবহন
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:০২ পূর্বাহ্ণ, জুন ০১, ২০২০
করোনাভাইরাসের কারণে সরকারী সাধারণ ছুটি ঘোষণা থাকায় দীর্ঘ দুই মাস ৬ দিন পর রাজধানীতে চলাচল শুরু করেছে গণপরিবহন। গতকাল রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের পাশাপাশি যানজটও পরিলক্ষিত হয়েছে। ঘোষণা দিয়ে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালেও মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি।
সরকার ঘোষিত গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা থাকলেও তা মানার কোনো দৃশ্যমান কোনো কিছু দেখা যায়নি। রাস্তায় চলাচলরত বাস বা স্টাফ বাসে ছিল না হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশকের মতো কোনো সুরক্ষা সামগ্রী।
নগরের কিছু গণপরিবহনে শুধু শারীরিক দূরত্বে বসার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যবিধি সীমাবদ্ধ ছিল- এমনটি দেখা গেছে। বেশিরভাগ গণপরিবহনের ক্ষেত্রে সেটিও মানা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাসের অধিকাংশেই ছিল না শারীরিক দূরত্ব। আগের মতই গাদাগাদি করে বাসের ভিতর আরোহন করতে দেখা গেছে। গাড়ির প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক রাখার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। এতে করে অনেকেই নানান ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। অনেকেই জানিয়েছেন শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহনে চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছেনা। গাড়ির প্রতিটি আসনে এমনকি ড্রাইভারের পাশে থাকা মেশিনের উপর বসেও যাত্রী চলাচল করতে হচ্ছে। যা আইন ও স্বাস্থ্য সম্মত নয়। এই বিষয়ে অফিস কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
অন্যদিকে পাবলিক সার্ভিস বাসগুলোতে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় দেখা গেছে। স্বাস্থ্য বিধি মানবে দূরের কথা কার আগে কে গাড়িতে উঠবে সেই প্রতিযোগিতায় মেতে ছিল যাত্রীরা। তাছাড়া গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারের মাঝেও স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি ছিল উপেক্ষায়। তাদের মুখে মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায়নি। কিছু গাড়ি ব্যতিক্রম থাকলেও তাতে শুধু আসন ফাঁকা ছাড়া অন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
এদিকে সরকারি বাস ছাড়াও নগরে গণপরিবহন চলতে শুরু করেছে। কিছু বাসে শারীরিক দূরত্ব মেনে বসতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ বাসেই সেটা মানা হচ্ছে না।
খিলগাঁও, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, ও গুলিস্তান রুটে ছোট লেগুনা চলাচল করতে দেখা গেছে। সেগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধির কোনো কিছু ছিলনা।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, বাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না কেউ। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না।
জীবাণুনাশক স্পেও করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব এখন শুধু কথা আর কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা বলা মুশকিল। তবে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি সবাইকে মেনে চলা উচিত।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সীমিত পরিসরে কিছু শর্তে গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবতা বিবেচনায় এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। তবে ভবিষ্যতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই চলাচল করে সেই বিষয়ে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কর্মকর্তারা। করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি এই চ্যালেঞ্জিং কাজটি করতে সদাই পুলিশ প্রস্তুত বলেও জানা গেছে।