ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

১৫ জুন পর্যন্ত ১৫ শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:১২ পূর্বাহ্ণ, মে ৩০, ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে আগামীকাল ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত চলাচল সীমিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এই সময়ে জনসাধারণের চলাচল সীমিতসহ ১৫ শর্ত দেওয়া হয়েছে। এক নজরে দেখে নিন ১৫ জুন পর্যন্ত যে ১৫ শর্ত মানতে হবে। বিশেষ করে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। ৫, ৬, ১২ ও ১৩ জুন সাপ্তাহিক ছুটি এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। প্রতিটি জেলার প্রবেশ ও বহির্গমন পথে চেকপোস্টের ব্যবস্থা থাকবে। জেলা প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এ নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, কর্মস্থলে যাতায়াত, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না। তবে সর্বাবস্থায়ই বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিষেধাজ্ঞাকালীন জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

হাটবাজার, দোকানপাটে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে।

শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহনগুলোকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাটবাজার, দোকানপাট এবং শপিংমলগুলো আবশ্যিকভাবে বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যে নিয়োজিত সংস্থা এবং জরুরি পরিসেবা, যেমন ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর এবং সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সড়ক ও নৌপথে সকল প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল প্রভৃতি) চলাচল অব্যাহত থাকবে।
কৃষিপণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং কেবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীরা এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।

ওষুধশিল্প, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সব কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন শিল্পকারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

নিষেধাজ্ঞাকালীন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। তবে অনলাইন কোর্স/ডিস্টেন্স লার্নিং অব্যাহত থাকবে।

ব্যাংকিং ব্যবস্থা পূর্ণভাবে চালু করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীগণ কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্র ব্যতীত সব সভা ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে আয়োজন করতে হবে।

উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। উক্ত সময়ে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চলাচলের বিষয় বিবেচনা করবে।

এই নিষেধাজ্ঞাকালে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ থাকবে। মসজিদ, মন্দির ও সব ধরনের প্রার্থনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় ও প্রার্থনা অব্যাহত থাকবে।

 
Electronic Paper