নওগাঁয় ধানের দামে কৃষক খুশি
কিউএম সাঈদ টিটো, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
🕐 ২:০৩ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২০
নওগাঁয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কাটা মাড়াইয়ের শুরুতেই কৃষকরা তাদের কষ্টের ধান বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি।
এদিকে ধান কাটা মাড়াই শুরু হওয়াতে এ প্রভাব পড়েছে জেলার চালের বাজারে। সকল ধরনের চাল প্রতি কেজিতে গত এক সপ্তাহ থেকে চার থেকে পাঁচ টাকা কমে কেনাবেচা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার জেলার ১১ উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৮০ হাজার হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, স্বল্প মূল্য সার, তেল ও কৃষিতে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ায় এখানকার চাষিরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হাজার ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জমিতে রোগবালাই না দেখা দেওয়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, নওগাঁয় ১৬ ভাগ ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে। জেলায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন ধরা হলেও ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। এর মধ্যে চিকন জাতের ধান ১ লাখ ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। চিকন জাতের ধান থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন ধরা হয়েছে। আর মোটা জাতের ধান ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। মোটা জাতের ধান থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি চাল উৎপাদিত হবে।
জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় ১০০ টাকা বেশি দরে প্রতি মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে। মোটা জাতের ধান ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা এবং চিকন জাতের ৭০০ টাকা থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি মণ কেনাবেচা হচ্ছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটোয়ারী জানান, জেলায় মিলারদের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ২৬০ মেট্রিক টন চাল ও ৬ হাজার ৫১ মেট্রিক টন আতপ চাল কেনা হবে। অপরদিকে কৃষকদের কাছে থেকে লটারি ও কৃষি অ্যাপসের মাধ্যমে সরাসরি ২৩ হাজার ২৩২ মেট্রিক টন ধান কেনা করা হবে।
পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তর কুমার জানান, নুতন ধান বাজারে আসায় চালের দাম কমেছে। বাজারে বর্তমানে তেমন কেনাবেচা নেই। জেলায় পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলে চালের বাজার আরো কিছুটা কমবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, কৃষকদের ধানের নায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ধান ও চাল বেশি করে কিনছে। বর্তমান ধানের বাজার যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগামীতে কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহী হবেন।