ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নওগাঁয় কমেছে চালের দাম

আব্দুর রউফ পাভেল, নওগাঁ
🕐 ৪:২৩ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২০

ধান-চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁ জেলায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সবকিছু বন্ধ থাকায় শ্রমিকরাও ফিরছেন কাজে। এতে চাল উৎপাদন অনেকাংশে কমে গেছে। অন্যদিকে পরিবহন জটিলতা ও হঠাৎ করে মোকামে চাহিদা কমে যাওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাল সরবরাহ আগের তুলনায় ৩০ ভাগে নেমেছে। এতে করে কেজিতে চালের দাম কমেছে ৪-৫ টাকা।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপ এবং ধান-চাল আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রতি বছর ১৬ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হয়। প্রায় চার লাখ টন খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা রাজধানীসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। করোনার আগে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাধারণত প্রতিদিন ৭০-৮০ ট্রাক চাল সরবরাহ করা হতো। ১৫-২০ দিন আগে বেশ কয়েকদিন মোটা চালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিন প্রায় ১৫০ ট্রাক চাল সরবরাহ করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে মোকামে চালের চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রতিদিন ২৫-৩০ ট্রাক চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমান বাজারে ব্রি-২৮ চালের দাম ৫০ কেজির বস্তা এক হাজার ৯০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা। স্বর্ণা-৫ চালের দাম এক হাজার ৮৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৯০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে যা আগে দুই হাজার ৫০ থেকে দুই হাজার ১৫০ টাকা ছিল। মিনিকেট নতুন চালের দাম দুই হাজার ১৫০ টাকা। যা আগে ছিল পুরাতন চাল দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা। নাজিরশাইল চালের দাম দুই হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।

তবে বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ছাড়া দেশের অন্য কোনো মোকামে চালের চাহিদা না থাকায় দিন দিন চালের দাম কমে যাচ্ছে। মোকামে চালের চাহিদা না থাকা ও নতুন ধান বাজারে আসায় ধানের দাম কমে যাওয়ায় চালের দাম কমতে শুরু করেছে।

ফারিহা রাইস মিলের মালিক শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মিলের নিয়মিত শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজে না আসায় চাল উৎপাদনের পরিমাণ কমে গেছে। এছাড়া লকডাউনের কারণে নওগাঁ থেকে অন্যান্য জেলার মোকামে চাল পাঠানোর জন্য পরিবহন সংকট হওয়ায় চাল সরবরাহ কমে গেছে। তবে ঢাকার মোকামের চাইতে কক্সবাজার উখিয়ায় আতপ চালের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলে ৯৬০টি চালকল আছে। এর মধ্যে হাসকিং ৯০৫টি ও অটোমেটিক ৫৫টি। যেখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কাজ করত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব শ্রমিক কাজে না আসায় চালকলগুলো চালু করতে পারছেন না মিলাররা। এছাড়া লকডাউনের কারণে ধান-চাল পরিবহন করা ব্যাপক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্নভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

নওগাঁ ধান-চাল আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, চলমান লকডাউন এবং করোনা আতঙ্কে শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক চালকল এখনও চালু হয়নি। এরপরও যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হচ্ছে মোকামে পর্যাপ্ত চাহিদা না থাকায় দিন দিন চালের দাম কমতে শুরু করেছে। চলতি বোরো মৌসুমে মাঠে পুরোদমে ধানকাটা শুরু হয়েছে। সাধারণত বছরের এ মৌসুমে ধান ও চালের দাম কমে যায়। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে চালকলগুলো পুরো দমে চালু করা যাবে।

 
Electronic Paper