ভিজিডি কার্ডের তালিকা তৈরীতে অনিয়ম
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
🕐 ১২:৪২ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২০
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১৪নং আড়িয়া ইউনিয়নে দুস্থ পরিবারদের সহায়তার ভিজিডি কার্ডের তালিকা তৈরীতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুস্থ ও অসচ্ছল পরিবার বাদে সচ্ছল পরিবার, স্বজনপ্রীতিসহ একই ইউপি সদস্যের স্ত্রীদের নাম একাধিকবার ওই তালিকাতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।
তথ্যমতে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ ইং অর্থ বছরের জন্য ১৪ নং আড়িয়া ইউনিয়নে ৯২টি দুস্থ পরিবারের জন্য ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত বরাদ্দকৃত প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল/গম পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে ভিজিডি কার্ডের নিদের্শীকায় বলা হয়েছে দুঃস্থ পরিবার, পরিবারের প্রধান নারী, ভূমিহীন, বসতবাড়ীর অবস্থা খারাপ দিনমজুরী করে কোন রকম সংসার চালায় এমন পরিবারকে তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করতে হবে। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি কমিটি যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে তালিকা তৈরী করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দেবার পর তালিকা চুড়ান্ত হয়ে ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য প্রদান করা হয়।
ইতিমধ্যে অত্র ইউনিয়নে চুড়ান্ত তালিকার ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, অত্র ইউনিয়নের নতুন ৯২ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ড সদস্য রাশিদুল ইসলাম তার নিজ ওয়ার্ডে এবং ৭নং ওয়ার্ডে তার স্ত্রী পারভীন ইয়াছমিনের নাম অর্ন্তভূক্ত করাসহ ভাতিজি, ভাইয়ের স্ত্রী, আপন মামী’র নাম অর্ন্তভূক্ত করেছে। একই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর ক্রমিকের হাজেরা খাতুনের নাম তালিকাভুক্ত থাকলেও আজ পর্যন্ত কোন চাল পায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। এছাড়া প্রায় সাত বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার বাইরে বিয়ে হয়ে যাওয়া এক নারী ক্রমিক নম্বর ৫ লাখি খাতুন, পিতা কাবেজ আলী’র নামেও ভিজিডি তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।
একইভাবে ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য খোশরুল ইসলাম ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী ছাবিনা খাতুনের নাম ২২ নম্বর ক্রমিকে অর্ন্তভূক্ত করেছেন। ক্রমিক নম্বর ২০ শ্রী শেফালী বালার স্বামী শ্রী মন্টু দাস বলেন আজ পর্যন্ত একবারও ভিজিডির চাল পায়নি এমনকি আমার নামের ভিজিডি কার্ডটাও হাতে পায়নি। আমার ওয়ার্ডের মেম্বার না থাকায় কার্ডটি চাইতে গিয়ে উল্টো চেয়ারম্যানের বকা শুনেছেন বলে জানান তিনি। এদিকে ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলীমও ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনের নাম ক্রমিক নম্বর ৭০ এ অর্ন্তভূক্ত করেছেন।
এছাড়া ক্রমিক নম্বর ৬৮ রানী খাতুন, স্বামী ফয়েজ সরদার, ক্রমিক নম্বর ৭২ তাছলিমা খাতুন, স্বামী হাফিজুল এবং ক্রমিক নম্বর ৮৩ হামেদা খাতুন, স্বামী রেফেজ্জেল সরদার অভিযোগ করে বলেন আজ পর্যন্ত কার্ড হয়েছে কিনা আমরা জানি না।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাঈদ আনসারী বিল্পব বলেন, ইউনিট সদস্যের স্ত্রী‘র নাম তালিকায় থাকাটা কি চেয়ারম্যানের জানা জরুরী নয়। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের স্ত্রীদের নামে কার্ড হওয়া ঠিক না। একজন ওয়ার্ড সদস্যের স্ত্রী’র নাম একাধিকবার থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন এটা কম্পিউটারে মিসটেক হয়েছে যা আমার জানা ছিলনা বলে তিনি জানান।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইশরাৎ জাহান বলেন, এ ধরনের অনিয়ম হলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।