পুলিশ শত্রু নয়, বন্ধু
আবু জাফর সিদ্দিকী
🕐 ৮:১৬ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০
কোথাও সংঘর্ষ-মারামারি, বেদখল, দুর্ঘটনা, যা-ই ঘটুক ঘটনাস্থলে কে আগে আসে? উত্তরে আসবে পুলিশ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই পৌঁছে যায় পুলিশ। এমন ভূমিকায় যারা থাকে তারা কি কখনো জনগণের শত্রু হতে পারে? কখনই না তাহলে অবশ্যই তারা জনগণের বন্ধু। আমরা যখন রাতে শান্তিতে ঘুমাই তখন তাদের ঘুম বিসর্জন দিয়ে আমাদের নিরাপত্তা দেয় পুলিশ। এলাকার যুব সমাজ যখন নেশায় আসক্ত হয় তখন পুলিশি ব্যবস্থাপনায় তাদের নেশা ছাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যখন কোনো সংঘর্ষ বাঁধে তখন পুলিশ এসে সে সংঘর্ষ রোধ করে।
এতকিছুর পরেও তারা কি আমাদের বন্ধু হতে পারে না? বর্তমানে মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে জনগণকে রক্ষা করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পুলিশ বাহিনীর। নিজেদের কথা, পরিবার-পরিজনের কথা না ভেবে জনগণকে রক্ষার্থে কাজ করা এক গোষ্ঠীর নাম পুলিশবাহিনী। কিন্তু আমরা সচেতন না হয়ে তাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছি! চোর-পুলিশ খেলছি। পুলিশ আসলে দোকান বন্ধ করছি, ভেতরে চলে যাচ্ছি আর পুলিশ চলে গেলে আবার দোকান খুলছি, রাস্তায় বের হচ্ছি। এতে করে কি পুলিশকে ঠকাচ্ছি নাকি নিজেদেরই ঠকাচ্ছি? দেশে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুলিশ। তারপরেও জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় রাস্তায় বের হলে পুলিশ কিছু বললে আমরা তাদের কতরকম গালি দিই। বর্তমানে পুলিশের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত সবার।
২৪ ঘণ্টায় ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা ডিউটি করে যে বাহিনী সেটাই আমাদের পুলিশবাহিনী। পুলিশ আমাদের গর্ব। পরিবার-পরিজন রেখে শুধু দায়িত্ববোধ থেকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চাকরি করে এ বাহিনী। তাদের ত্যাগ, তাদের বিসর্জন আজীবন মনে রাখার। এ মহামারিতে দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে পুলিশের ভূমিকা আজীবন মনে রাখবে বাঙালি জাতি। তাদের ত্যাগ ভুলে যাওয়ার মত না। তাদের জন্য বাঙালি জাতি গর্বিত।
করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনে স্বজনরা এগিয়ে না এলেও পুলিশ আসবে এ আস্থা অর্জন করেছে বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী। আক্রান্তদের সেবা, কোয়ারান্টিন নিশ্চিত, খাবার পৌঁছে দেওয়া, লাশ দাফন করা সবই করছে পুলিশ। তাদের এ কাজের জন্য দেশের সমস্ত পুলিশ অফিসার-সদস্যদের জানাই স্যালুট। মহামারি দূর হোক, পুলিশ দীর্ঘজীবী হোক।
আবু জাফর সিদ্দিকী : গণমাধ্যম কর্মী, নাটোর