ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সুধীর বরণ মাঝি
🕐 ৪:১৭ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২০

উদ্দীপক : মাথিন চাকমা,অন্তরা সাহা ও অরুন এই তিন জনে একসাথে বসে রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান দেখছিল। হঠাৎ তারা লক্ষ করল ছায়ানটের শিল্পীদের গান পরিবেশনের পর খাগড়াছড়ি থেকে আগত চার নৃত্য শিল্পী নৃত্য পরিবেশন করছে। তাদের পরনে ছিল আঞ্জি ও থামি।

ক) চাকমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব কী? খ) মিউয়া বলতে কী বোঝায় ? গ) উদ্দীপকে চার নৃত্য শিল্পী কোন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিচয় বহন করছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ) ‘বৈসাবি আর পহেলা বৈশাখ আজ এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে’।এই উক্তিটি উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ক) উত্তর : চাকমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব হলো ’বিজু’ উৎসব।

খ) উত্তর : মিউয়া বলতে গারোদের একটি জনপ্রিয় খাদ্যকে বোঝায়। ভাতের সাথে মাছ ও শাক সবজি খেয়ে থাকে। তাদের একটি বিশেষ খাদ্য হচ্ছে কচি বাঁশের গুঁড়ি। আর এই বিশেষ খাদ্যের জনপ্রিয় নাম হচ্ছে মিউয়া।

গ) উত্তর : উদ্দীপকের চার নৃত্য শিল্পী বাংলাদেশের পাবর্ত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মারমাদের পরিচয় বহন করছে। বাংলাদেশের পাবর্ত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে মারমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। মারমা নৃগোষ্ঠীর অধিকাংশই রাঙামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি জেলায় বাস করে। উদ্দীপকের চার নৃত্য শিল্পী খাগড়াছড়ি থেকে আগত। উদ্দীপক থেকে জানা যায় রমনা বটমূলে খাগড়াছড়ি থেকে আগত চার নৃত্য শিল্পী নৃত্য পরিবেশন করে।তাদের পরনে ছিল আঞ্জি ও থামি। এ থেকে বোঝা যায়, তারা মারমা নৃগোষ্ঠীর লোক। প্রকৃত পক্ষে অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ন্যায় মারমাদেরও পোশাকের ক্ষেত্রে নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। মারমা মহিলারা গায়ে ব্লাউজ পরে তার নাম ‘অঞ্জি’। তাছাড়া তাদের আরেকটি পোশাক হলো ‘থামি’। তারা নিজেরাই কাপড় বুনে এই পোশাকগুলো তৈরি করে। উপরের সংস্কৃতি থেকে বোঝা যায়, উদ্দীপকের চার নৃত্য শিল্পী ’মারমা’ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর।

ঘ) উত্তর : নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য পালিত পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বৈসাবি আর বাঙলির পহেলা বৈশাখ এক সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ বহুকাল থেকে বাঙালিদের সাথে এই ভূখন্ডে বসবাস করছে। জীবনের প্রয়োজনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ যেমন বাঙালি সংস্কৃতি থেকে বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করেছে তেমনি বাঙালিরাও এর ব্যতিক্রম নয়। উৎসব পালনেও এ ধারা বহমান আছে। পহেলা বৈশাখ নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য বাঙালিদের সার্বজনীন উৎসব। অন্যদিকে বৈসাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার উৎসব। উদ্দেশ্যগত দিক বিবেচনায় এ দুটি উৎসব একই ধরনের। শুধু পার্থক্য হচ্ছে উৎসব পালনের ধরনে। কিন্তু সংস্কৃতির আন্তঃবিনিময়ের ফলে এই পার্থক্যও যেন গৌণ হয়ে পড়েছে।

যেমন উদ্দীপকে দেখা যায়, বাঙালির পহেলা বৈশাখে মারমারা নৃত্য পরিবেশন করছে। একইভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বৈসাবি অনুষ্ঠানও আজ বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এর ফলে বাঙালি সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে আরও সমৃদ্ধ ও বৈচিত্রময়। পরিশেষে বলা যায়, উক্তিটি বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরদের সংস্কৃতির আন্তঃসম্পর্ক বিবেচনায় যথার্থ।

সুধীর বরণ মাঝি, শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় চাঁদপুর।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper