ক্যাম্পাসে ফেরার আকুলতা
আশরাফুল ইসলাম সুমন
🕐 ১০:০৬ অপরাহ্ণ, মে ০৯, ২০২০
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নোবিপ্রবি অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ রয়েছে। সব কিছু কত স্বাভাবিক ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল ক্লাস, পরীক্ষাসহ সবকিছু। করোনা সব কিছু ভেস্তে দিলো। ছুটির প্রথমদিকে সবার মনে উৎসাহ থাকলেও এখন তারা ছুটিকে মনে করছে কারাবন্দি। লকডাউনের এই দিনে সবাই এখন ঘরবন্দি। অফুরন্ত এই অবসরে কারো মনে নেই আনন্দ।
সবাই আবার ফিরে যেতে চায় প্রাণের ক্যাম্পাসে। সকালে লাল, সাদা বাসে করে ক্লাসে যাওয়া, শান্তিনিকেতন, নীলদিঘি, প্রশান্তি পার্কের আড্ডা, সেন্ট্রাল মাঠে খেলাধুলা করা নোবিপ্রবিয়ানরা এখন বড্ড মিস করে।
সারাদিন ঘরবন্দি থাকা শিক্ষার্থীরা আবারও ফিরতে চায় প্রাণের ক্যাম্পাসে।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান শুভ বলেন, সাধারণত ছুটি পেলে শিক্ষার্থীরা খুশি থাকে, কিন্তু এইভাবে বন্দি ছুটিতে আমি কিংবা কোন শিক্ষার্থীই খুশি থাকার কথা না। ক্যাম্পাসের টঙের অরুচিকর খাবার কিংবা মাস শেষে ফাঁকা পকেট খুবই ভালো এই বন্দি জীবন থেকে। খুব ইচ্ছে করে ক্যাম্পাসে গিয়ে বন্ধুবান্ধবের সাথে গানের আড্ডায় মেতে উঠতে, ইচ্ছে করে জুনিয়রদের নিয়ে চায়ের কাপে গল্পের ঝড় তুলতে জামাল মামার টঙে।
বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এম ফাইয়াজ হাসান বলেন, আর ভাল্লাগে না। কবে পাবো ক্যাম্পাসের ভালোবাসা, ক্যাম্পাসের প্রতিটি স্মৃতি।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম রুবেল বলেন, প্রতিদিনের মতো লাল-সাদা বাসের ভিড়ের ভিতর দাড়িয়ে যাওয়া-আসায় নিজের অস্তিত্ব ছিলো। করোনার এ দুর্দিনে বাসায় বসে নিজের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ গুলোও মহাবিরক্ত।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান আকরাম বলেন, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ভার্সিটিতে পদার্পণ। আর এই অল্প সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসটাকে খুবই আপন করে নিয়েছি। খেলাধুলা, ডিবেট, বন্ধুদের সাথে হতাশার মোড় আর শান্তিনিকেতনের আড্ডা, ক্যাফেটেরিয়ায় সিনিয়রদের পকেট ফাঁকা করে খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করা, বাসে যাওয়ার সময় চিৎকার করে সম-স্বরে গান গাওয়া খুব বেশিই মিস করতেছি। বইগুলোতে ধূলো জমেছে অনেক, আর এর মাঝেই খুঁজে ফিরি ক্যাম্পাসের সেই সোনালী দিনগুলি। কবে ঘটবে এই প্রতীক্ষার অবসান।
সিএসটিই বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আলভী বলেন, বন্ধে মায়ের হাতের রান্না খেতে পাওয়ার খুশি নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়েছিলাম। বন্ধের সময় সীমা কিছুদিন পরপর বাড়াতে থাকে তখন থেকে ভেতরে একটা চাপা আতঙ্ক চেপে বসে। ক্যাম্পাস জীবনে হাপিয়ে উঠা সময়গুলো মিস করছি।