ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মানবতার কল্যাণে ট্রিপল সি

জেলি
🕐 ৭:১১ অপরাহ্ণ, মে ০৫, ২০২০

পল্লী কবি জসীম উদদীন বলেছিলেন- সবার সুখে হাসব আমি,/ কাঁদব সবার দুখে,/ নিজের খাবার বিলিয়ে দিব/ অনাহারির মুখে।
ট্রিপল সি অর্থাৎ Char charity for change এই ননপ্রফিট প্রতিষ্ঠানটি ঠিক তেমন কাজ করছে খাবার বিলিয়ে দিচ্ছে অনাহারির মুখে। এটি প্রথম ফেসবুক প্লাটফর্ম হিসেবে বাংলাদেশে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের অসহায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে সহায়তা প্রদান করছে।

CCC (Char charity for change) কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক সম্মানিত পুলিশ সুপার ও বর্তমান রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স, রংপুর এর সম্মানিত কমান্ড্যান্ট (এসপি) মেহেদুল করিম, পিপিএম-এর তত্ত্বাবধানে এই গ্রুপের পক্ষ থেকে মানবতার কল্যাণে গরিব ও দুঃখী মানুষের দুবেলা দু-মুঠো খাবার দুলে দেওয়া হচ্ছে।

এই নন প্রফিট প্রতিষ্ঠানটি কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে-

Feeding activites
Awarness activites
Intellectual activites
Creative activities
Donating activities

করোনা আতঙ্কে যখন গরিব মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে, চুলোয় হাঁড়িটা বসানোর চিন্তা যখন কপালে ভাঁজ সৃষ্টি করছে, তখনই মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংস্থাটি। ভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করেছে বর্তমান করোনা আতঙ্কে ঘরবন্দি অসহায়, নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জন্য। ইতোমধ্যে হাজার হাজার পরিবারের বিশ হাজার সদস্যের মাঝে ৭ দিনের খাবার দিয়েছে।

রংপুরের ১৪ হাজার ভাসমান মানুষকে খাইয়েছে। ১০ টাকা কেজি চাল ক্রয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করেছে। ৫০ হাজার টাকা বিভিন্ন নিম্নমধ্যবিত্তকে দিয়েছে। অনেক মধ্যবিত্ত আছে যারা লোকলজ্জায় নিজের অভাব অনটনের কথা স্বীকার করে না এমন মানুষের মধ্যে চুপিচুপি বিকাশের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহায়তা করে সংসার চলানোর ব্যবস্থা করেছে।

এছাড়াও এই গ্রুপ গত সাতদিন ধরে আনুমানিক তিন হাজার রাস্তার কুকুরকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে। যা সত্যি প্রশংসনীয়।

এই প্রতিষ্ঠানের বিতরণ কার্যক্রমের মূল আদর্শ হল চুপিচুপি চ্যারিটি অর্থাৎ রাতের আঁধারে বিতরণ, কোনো ফটোসেশন নেই, নেই মডেলিং, নেই জমায়েত, নেই জনসভা। যেন পাশের বাড়ির লোকও জানতে পারে না। সৃষ্টিকর্তার সেই আদি শিক্ষা, এক হাত দিলে যেন আরেক হাত জানতে না পারে।

এই ব্রত নিয়ে ট্রিপল সি সর্বোচ্চ গোপনীয়তা নীতি অনুসরণ করে নীরবে নিভৃতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা সকলকে এক অন্যরকম অনুভূতিতে আবদ্ধ করছে। কার্যক্রম নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।

Feeding activites-এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কাজ করছে ট্রিপল সি। যেমন- (Awarness activites) অর্থাৎ করোনায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম যা বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিভিন্নভাবে লোকজনের কাছে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। সুরক্ষা প্যাক বিতরণ, মাস্ক, সাবান, স্যানিটাইজার বিতরণ, সচেতনতামূলক পোস্ট, ভিডিও তৈরি করে শেয়ারিং, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ করছে।
এছাড়া Intellectual activites (বুদ্ধিদীপ্ত কার্যক্রম)-এ জ্ঞান ভাগ করে নেওয়া, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাক্ষাৎকার, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করছে। গ্রুপের মাধ্যমে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

Creative activities (সৃজনী কার্যক্রম)-এ কবিতা রচনা, গান নাটক বা করোনা ডকুমেন্টারিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য ইস্যুতে সৃজনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সচেতনতামূলক পোস্টার তৈরির ওয়েব পেজ ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছে।

Donating activities (দান কার্যক্রম)-এ অনুদান এবং স্পন্সর সংগ্রহ, খাদ্য সংগ্রহ রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। যা এই ট্রিপল সি-এর আরেকটি বিশেষত্ব। শক্ত রিপোর্টিং ব্যবস্থা, বিতরণ রাতেই শেষ করে নির্দিষ্ট ফরমেটে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া বা জবাবদিহির এক সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই ননপ্রফিট প্রতিষ্ঠানটিকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এডমিন প্যানেলে কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি রয়েছেন। তারা হলেনÑ ডা. মিরাজ রহমান (ইউকে-র শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী), ডা. মনজুরুল করিম (এমডি, চর্মবিজ্ঞান), আবু আলী ইবনে সিনা, (অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম শীর্ষ ক্যান্সার বিজ্ঞানী), ডা. নীলিম মহসিন রেজা, (সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, বিইউপি, ক্যান্টনমেন্ট ঢাকা), আশিকুর রহমান আশিক (প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে একবার এবং শিক্ষামন্ত্রীর নিকট থেকে একবার স্বর্ণপদক বিজয়ী কৃষিবিদ; সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি); কে ডি হাবিবুর (ঢাবির শিক্ষার্থী, ওসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজের মত অনেক বিখ্যাত পাবলিকেশন হাউজের বাংলাদেশের একমাত্র এজেন্ট); হাসিব (আইটি বিশেষজ্ঞ, এমিডেক্স আইটি-র মালিক, আপওয়ার্ক ডট কম-এ আইটি পেশাদারদের অনেক অনুসন্ধান করেছেন, সম্প্রতি তিনি নাসার সঙ্গে একটি সফল প্রকল্প শেষ করেছেন। গুগলের সঙ্গেও কাজ করছেন); আব্দুল জলিল (সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার (Euroffice UK)।

এমন গুণীজনের হাত ধরে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে যাক চর চ্যারিটি ফর চেইঞ্জ। এর মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে অনেক গরিব-দুঃখী, হাসি ফুটছে অনেক মলিন মুখে। পরিশেষে বলতে চাই-
চর চ্যারিটি মানবতার কল্যাণে এগিয়ে যাক
গরিব-দুঃখী, মধ্যবিত্ত সকলেই স্বস্তি পাক।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper