ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মির্জাগঞ্জের সূর্যমুখী চাষে সাফল্য

উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)
🕐 ৪:২৫ অপরাহ্ণ, মে ০২, ২০২০

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে দু’ফসলী ও পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। এই চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।

করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলার কর্মহীন অসহায় লোকরা ঘরে বসে না থেকে খাদ্য খাট মোকাবিলায় তাদের পতিত জমিতে করেছে সূর্যমূখীর আবাদ। এই চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এই ধারণা থেকে চর ও আবাদি জমিতে কৃষিবিভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এই এলাকার চেহারা। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার মির্জাগঞ্জ চরে, পূর্ব সুবিদখালী দত্তের চরে, পশ্চিম সুবিদখালী, কাকড়াবুনিয়া, মজিদবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ১০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা এস-২৭৫, হাইসান-৩৩ ও বাড়ি সূর্যমুখী হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের কৃষক জলিল হাওলাদার বলেন, এবছই প্রথম ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমূখী চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সূর্যমুখীর এস-২৭৫ (হাইব্রিড) জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার বিনামূল্যে সংগ্রহ করেছি। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ করেছি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারি করে বীজ রোপন করেছি। তিন মাসের মধ্যে ফুল আসা শুরু হয়েছে। খুব ভালো ফলন হইছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ ন্যায্যমূল্য কৃষকদের কাছ বীজ সংগ্রহ করবে। ৭-৮ দিনের মধ্যেই বীজ সংগ্রহ করা যাবে।

পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক রুস্তুম আলী বলেন, সূর্যমুখী চাষে খরচ অল্প এবং পরিশ্রমও কম। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় এক একর জমিতে সূর্যমূখীর আবাদ করছি। অধিক ফলন হওয়ায় প্রতিবছরই সূর্যমুখীর চাষ করবো।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যমুখীর তেলের বিকল্প নেই। ভারতে এই তেল খুবই জনপ্রিয় ও প্রচলন আছে চোখে লাগার মতো। অন্য তেলের চেয়ে যদিও একটু দাম বেশি। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জল, মাটি সূর্যমুখী চাষের অনুকূলে। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে, প্রসার লাভ করছে না সে রকমভাবে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে তার দাম। অথচ বাংলাদেশে সূর্যমুখীর সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আমরা বিদেশ থেকে রিফাইন্ড সয়াবিন তেল আমদানি করি, তাতে আছে ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান।

সূর্যমুখী উৎপাদনে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ হতে পারে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার অনুকূলে শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি মাথায় রেখে। সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল সংগ্রহ ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রিফাইন্ড করে সূর্যমুখী তেল বোতলজাত করে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে বাজারজাত করা যেতে পারলে, তেল সহজলভ্য হতো এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাও থাকতো।

তিনি আরও বলেন, এবারে সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহ করা হবে। যাতে কৃষকরা লাভবান হয় এবং ভবিষ্যতে সূর্যমূখী চাষে কৃষকরা উৎসাহী হন। সূর্যমুখীর স্বাভাবিক ফলন বিঘা প্রতি ৬ থেকে ১০ মণ, তবে মির্জাগঞ্জ চরাঞ্চলে সূর্যমুখীর ফলন দশ মণের বেশি আশা করছি। মির্জাগঞ্জে সূর্যমুখীর চাষ করা হলে এ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়রেন ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

 

 
Electronic Paper