ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুশ্চিন্তায় তরমুজ চাষিরা

আল আমিন, রাঙ্গবালী (পটুয়াখালী)
🕐 ১২:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৯, ২০২০

রসালো ফল তরমুজের ভরা মৌসুম চলছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে রাঙ্গাবালীতে যারা তরমুজ আবাদ করেছেন, তাদের মুখে হাঁসি নেই। তাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। সর্বনাশা করোনা ও বৃষ্টি এসে, তাদের সেই স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। এখন দিগন্তজোড়া ক্ষেতে সবুজ লতায় মোরানো তরমুজের সমারোহ আছে। কিন্তু বাজারদর কম, চাহিদাও কম। ক্ষেতে তরমুজ পাকা শুরু হলেও পরিবহন সংকট, ভাড়া দিগুন। ফলে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের দশ হাজার তরমুজ চাষি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 

করোনা প্রাদুর্ভাবে দেশজুড়ে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতে দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজ উৎপাদনে অন্যতম এলাকা হিসেবে পরিচিত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দশ হাজার চাষি বিপাকে পড়েছেন।

চাষিরা বলছেন, রাঙ্গাবালীর বেশিরভাগ তরমুজ রাজধানী ঢাকায় বাজারজাত করা হয়। কিন্তু করোনার প্রভাবে রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই জনমানবশূন্য, অচল অবস্থা। তাই সেখানে তরমুজের চাহিদা অনেকটাই কম। যতটুকুই চাহিদা আছে, তাও বাজারজাত করা যাচ্ছে না। কারণ, ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌরুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ। তাই বাড়তি ভাড়া দিয়ে রাঙ্গাবালী থেকে হরিদেবপুর ট্রলারযোগে, পরে সেখান থেকে ট্রাকে ঢাকায় তরমুজ পৌঁছাতে হয়। ভাড়া দিগুন হলেও পরিবহন সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছে চাষিরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রতি হেক্টরে ৪৫ টন হারে এ উপজেলায় ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭০০ টন ফলন উৎপাদন হয়েছে। যেখানে চাষির খরচই হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। পরিস্থিতি ভাল হলে ৫০০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা করছেন তারা। এছাড়াও এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১০ হাজার চাষি ৭ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন। তবে মৌসুমের শুরুতে অকাল বৃষ্টিপাতের কারণে ১০ হাজার ৫০ হেক্টর জমির আবাদ লক্ষ্যমাত্রা কৃষি বিভাগ নির্ধারণ করলেও ক্ষয়ক্ষতির কারণে তা অর্জন হয়নি।

তরমুজ চাষি শাহিন মুন্সি বলছেন, ভাল ফলন হলেও সময়মত বিক্রি করতে না পারলে ক্ষেতের তরমুজ ক্ষেতেই পঁচবে। ক্ষতি হবে কোটি কোটি টাকা। তাই তরমুজ চাষিদের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন চাষিরা।

আরেক চাষি জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, বছরের শুরুতে দুইবার অকাল বৃষ্টিতে গাছের চারা মরে গিয়ে আমাদের অনেক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারপরেও ধারদেনা করে প্রজেক্ট নতুন করে শুরু করি। এবার ফলন ভালো কিন্তু বর্তমান বাজারদর তেমন নেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে পরিবহণে নানা সমস্যা। কৃষিপণ্য পরিবহণে অনুমতি থাকলেও ট্রলার ও ট্রাক যেতে চাচ্ছে না। যারাও যান, অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন। আগাম আবাদের কারণে ইতোমধ্যে ৫ শতাংশ ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি হয়েছে।

এখনও ৭ হাজার ২৮০ হেক্টর জমির তরমুজ বিক্রি হয়নি। তাই নিবিঘ্নে  বাজারজাত করতে পারলে চাষিরা লাভবান হবেন বলে মনে করছেন তিনি।

 

 
Electronic Paper