ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ দিশেহারা

তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ৩:২৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০২, ২০২০

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকার রাজধানীসহ সারাদেশের অফিস আদালতে সরকারি ছুটির পাশাপাশি রেলপথ, নৌপথ, সড়কপথ বাণিজ্যিক বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করার পর নগরীতে খেটে খাওয়া মানুষের আয় রোজগারের পথ বন্ধ। কাজ বন্ধ, আয় বন্ধ থাকায় এই শ্রেণির মানুষের মধ্যে বাড়ছে হাহাকার।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকারের দেওয়া ছুটিকে তারা যথাযথ মনে করেন তবে তা এত লম্বা হবে এমনটা ধারণা করতে পারেননি তারা। আয় বন্ধ হওয়ায় পরিবার নিয়ে কি অসহায় অবস্থায় পড়েছেন তাও তুলে ধরলেন তারা। ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার রফিকুল ইসলাম আদাবর বাজার এলাকায় বসবাস করেন। তার সঙ্গে কথা হয়, তিনি এই প্রতিবেদককে বললেন, চরম অবস্থায় পড়ে গেছেন, ঢাকায় থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বললেন, করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে, সরকার দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সব বুঝি তবে আমাদের মতো প্রায় ৩০/৪০ লাখ মানুষ রাজধানীতে স্ত্রী পুত্র নিয়ে আছে। তাদের হাড়ি উঠছে না। গত কয়েক দিনে বিচ্ছিন্নভাবে কোন কোন বিত্তবান মানুষ কিছু অসহায় দরিদ্রকে সাহায্য সহযোগিতা করেছে। কিন্তু এভাবে তো আর চলে না।

শ্যামলীর সুজন ইসলাম নামে এক ব্যক্তি দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, করোনা বৈশি^ক একটি দুর্যোগ। তাই সবার উচিত ঘরে থেকে নিয়ম মানা, সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরা যদি পাশে দাঁড়ায় তাহলে এই কঠিন সময়টা পার হওয়া যাবে।

আদাবর বায়তুল আমান হাউজিং এলাকার বাসিন্দা হাজী আবদুস সোবাহান বলেন, করোনা ভাইরাসটি মারাত্মক আর এ কারণে বাসা থেকে নামতে ভয় লাগে। তারপরেও বাসায় থেকে গতকাল আশপাশের কিছু গরিব মানুষকে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলসহ প্রায় ৫০টি পরিবারকে সহযোগিতা করেছি। আদাবর রিং রোডের আরেক বাসিন্দা আহসান হাবিব নাহিদ বলেন, আমি ছাত্র মানুষ তারপরেও বাসা থেকে বের হচ্ছি না।

কারণ রোগটি ছোঁয়াচে। তবে যতটুকু দেখেছি তাতে মানুষের কষ্টটা খুব চোখে পড়ছে।

রাজধানীতে প্রায় ২ কোটি মানুষ বসবাস করে এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখের বেশি রিকশাচালক। ফুটপাতের দোকানদার রয়েছে প্রায় ৫ লাখ, রেলস্ট্রেশনে ফেরি করে সংসার চালায় প্রায় ৫০ হাজার। এছাড়াও রয়েছে ভ্যানচালক, ফুটপাতের চায়ের দোকানিসহ নানা ধরণের খেটেখাওয়া মানুষগুলোর মধ্যে হা-হুতাশ শুরু হরেছে।

গত দু’তিন দিন ধরে ধীরে ধীরে রাজধানীতে মানুষের চলাফেরা বাড়ছিল, গলির ভেতরে ছোটখাট দোকানও টুকটাক খোলা থাকতো, কিন্তু নতুন করে ছুটি বাড়ানোর ফলে আর সেনাবাহিনী আরও কঠিন হবে এমন প্রচারণায় মানুষের রাস্তায় বের হওয়া কমে গেছে। ফলে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ আর কষ্টের দিনও আরও বড় হচ্ছে এমনটাই বললেন, খোলা কাগজের সঙ্গে কথা বলা মানুষরা।

 

 

 
Electronic Paper