পাহাড়ে বাড়ছে হাম
বান্দরবান প্রতিনিধি
🕐 ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০২, ২০২০
পার্বত্য তিন জেলায় বাড়ছে হামের প্রকোপ। গত ১৩ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এ রোগে নয়টি শিশু মারা গেছে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সাতটি, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় একটি এবং বান্দরবানের লামায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৩৬টি শিশু। তাদের বয়স ১০ বছরের নিচে। বান্দরবানের থানচিতে নতুন করে আরও তিন শিশু আক্রান্ত হয়েছে।
আক্রান্ত শিশুরা হলো থানচির তংক্ষং পাড়ার উমং প্রু মারমা (২), হেডম্যান পাড়ার উম্যাসাইন মার্মা (৯) এবং নুসাইমং মার্মা (১)। তাদের থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
থানচি তংক্ষ্যং পাড়ার ছোমং মারমা জানান, আমার দুই বছরে ছেলের জ্বর-সর্দি ও শরীরে ফোটা ফোটা উঠছিল। পাড়ায় মুরুবিরা বললো হাম হয়েছে। এ কথা শোনার পরপরই ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
তবে আক্রান্ত শিশুরা সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাহাত। তিনি বলেন, তারা হামে আক্রান্ত কিনা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু মারমা জানান, এ সময়টা হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তাই এ লক্ষণ দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। থানচিতে ভর্তি থাকা তিন শিশুদের শরীরে হামের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করেছি।
এদিকে, ১৩ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এ রোগে পার্বত্য তিন জেলায় নয়টি শিশু মারা গেছে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সাতটি, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় একটি এবং বান্দরবানের লামায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৩৯টি শিশু। তাদের বয়স ১০ বছরের নিচে।
তবে রাঙ্গামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা জানান, যে শিশুরা মারা গেল বাঘাইছড়ি উপজেলার বেশকিছু গ্রামে, সেগুলো আসলে যে হাম সেটা আমরা এখনও নিশ্চিত নই। আক্রান্ত শিশুদের নমুনা সংগ্রহ করে তা হাম নাকি, অন্য কোনো রোগ তা পরীক্ষা করার জন্য ঢাকাই পাঠিয়েছি। সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে বলতে পারবো সেটা হাম কিনা।
সিভিল সার্জনের দেওয়া তথ্যমতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহে গ্রামে হামে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল পাঁচ শিশু। তখন সাজেক ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রাম অরুণপাড়া, নিউথাং পাড়া এবং হাইচপাড়ায় হামে আক্রান্ত হয়েছিল শতাধিক শিশু।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় মারা গেছে আরও দুই শিশু। ২৫ মার্চ গুরুতর অবস্থায় পাঁচ শিশুকে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) নেওয়া হয়।