ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সুধীর বরণ মাঝি
🕐 ১:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০১, ২০২০

অপ্রয়োজনে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। অন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। সর্বোপরি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে

উদ্দীপক : মালেক প্রকৃতি ও জীবন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের ওপর একটি প্রতিবেদন দেখে। প্রতিবেদনটি থেকে সে জানতে পারে এক সময় বাংলাদেশে প্রচুর গাছ, জলজ প্রাণী ও মাছ ছিল। কিন্তু মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডের ফলে এসব জলজ প্রাণী ও মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর।

ক) প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে? খ) বর্তমানে ওষুধ শিল্পকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প বলা হয় কেন? গ) উদ্দীপকে নির্দেশিত জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ) উদ্দীপকে নির্দেশিত সমস্যা থেকে উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত উপস্থাপন কর।

ক) উত্তর: প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া সব বস্তুকেই প্রাকৃতিক সম্পদ বলে।

খ) উত্তর: রপ্তানি খাতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় বর্তমানে ওষুধ শিল্পকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প বলা হয়। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ওষুধ কোম্পানি তৈরি হয়েছে। যা দেশের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করছে এবং একই সঙ্গে বিদেশেও ওষুধ রপ্তানি করছে। ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ২০ কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে।

গ) উত্তর: উদ্দীপকে নির্দেশিত জীববৈচিত্র্য হ্রাসের জন্য মানুষের অসচেতনতা, অবিবেচেনা ও ভোগসর্বস্ব মানসিকতাই দায়ী। বর্তমানে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। আর পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পেছনে মানুষের নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রধান নিয়ামক। তাই বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য হ্রাসে মানুষই বেশি দায়ী। বাংলাদেশ এক সময় জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রাণীকুলের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের বংশবিস্তারেও নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। আবার শিল্প-কারখানা ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ুদূষণের পরিমাণও বাড়ছে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়ছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া কৃষি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারও পরিবেশের ক্ষতি করছে। এসব কারণে উদ্দীপকে উল্লিখিত জলচর প্রাণী ও গাছের মতো প্রাণীকুলের অন্য সদস্যও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আর এসব কিছুর মূলেই রয়েছে মানুষের স্বার্থান্বেষী মনোভাব ও পরিবেশ বিনিষ্টকারী নানা কর্মকাণ্ড।

ঘ) উত্তর: উদ্দীপকে নির্দেশিত সমস্যাটি হলো জীববৈচিত্র্য হ্রাস; আর এ সমস্যা সমাধানে মানুষের সচেতনতাই মুখ্য। মানবসৃষ্ট নানা কারণেই বর্তমান জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। তাই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মানুষকেই সচেতন হতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কর্মকা- থেকে বিরত থেকে পরিবেশ রক্ষায় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত জনসংখ্যার নানা প্রয়োজন মেটাতেই বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে।


তা ছাড়া নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠার কারণেও কৃষি জমি ও বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের বৃক্ষ নিধনের পরিবর্তে বৃক্ষরোপণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তা ছাড়া কৃষি উৎপাদনে জীববৈচিত্র্য নীতি অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ অপ্রয়োজনে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। অন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। সর্বোপরি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। উপর্যুক্ত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য হ্রাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সুধীর বরণ মাঝি
সিনিয়র শিক্ষক, হাইমচর মহাবিদ্যালয়, চাঁদপুর।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper