ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শ্রমিকদের বেতন পরিশোধসহ দায়িত্বশীল আচরণ করুন

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:১০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২০

করোনার মহামারিতে দেশ যদি জবুথবু, এমন অবস্থায়ও শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হচ্ছে প্রাপ্য বেতনের জন্য। এটা এককথায় অমানবিক। শ্রমিকদের বেতন সময়মতো পরিশোধ করা যে কোনো প্রতিষ্ঠানের নৈতিক দায়িত্ব। কোনো কারণে তা করতে ব্যর্থ হলে উভয়পক্ষের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার যৌক্তিক মীমাংসা করা যায়। কিন্তু তা না করে প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ‘প্রভু’ হয়ে ওঠে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করেন তখনই সমস্যা দেখা দেয়। শ্রমিকরা হন বিক্ষুব্ধ, কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীল হয়। উভয়পক্ষের মতদ্বৈততায় সরকার ও প্রশাসন একধরনের বেকায়দায় পড়ে।

 

দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিনশিলা খনির শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি) কর্মকর্তাদের ১৪ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। তবে, খনি কর্তৃপক্ষ আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে তাদের বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতন পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলে গতকাল বেলা ১২টার দিকে শ্রমিকরা তাদের অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মধ্যপাড়া কঠিনশিলা খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসির অধীনে সহস্রাধিক বাংলাদেশি শ্রমিক খনির ভূ-গর্ভস্থ ও উপরিভাগে কাজ করেন। এসব শ্রমিককে গত ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। তাছাড়া চলতি মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রেখে মঙ্গলবার রাত ৯টায় খনির উৎপাদনসহ সব বিভাগের কাজ বন্ধ ঘোষণা করে নোটিস ঝুলিয়ে দেয় জিটিসি।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জিটিসির ড্রিলিং এন্ড ব্লাস্টিং অপারেটর রফিকুল ইসলাম বুধবার বেলা ১টায় বলেন, আমাদের শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন না দিয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে খনির কার্যক্রম বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হলে শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শামিম নামের এক শ্রমিক বলেন, বেতন দেওয়া হয় মাত্র ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। দূর্মূুল্যের বাজারে এ টাকায় শ্রমিকদের ১৫ দিনও চলে না। এ ব্যাপারে মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, জিটিসির কাছে শ্রমিকদের পাওনা রয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসের পুরো বেতন। এছাড়াও চলতি মাসের বেতনও পাবেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশ করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরু হয়েছে। আমরা জিটিসির সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে তাদের পাওনা পরিশোধ করার জন্য বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক যাবেদ পাটোয়ারীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। অথচ এ সময়ে দায়িত্বশীলদের বক্তব্য পাওয়া ছিল খুব দরকার। শ্রমিকরা যাতে আশ^স্ত হয় এমন বক্তব্যই ছিল সময়ের দাবি। বেতন পরিশোধ করা না হলেও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান এখনো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজেদের স্বার্থে, শ্রমিকের স্বার্থে সর্বোপরি নিজের স্বার্থে বর্তমানে সবারই উচিত একটু সংযত হওয়া, মানবিক আচরণ করা। দেশ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছুরই সময় আসবে। সেই সুসময়ের জন্য আপাতত সরকার নির্দেশিত পন্থাই অবলম্বন করা জরুরি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper