ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আয়োজন ছাড়াই পালিত হলো স্বাধীনতা দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২০

ছিল না লাখো জনতার ঢল, ছিল না রাশি রাশি ফুল। একেবারে জনশূন্য ছিল সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এমন অকল্পনীয় চিত্রকে সাক্ষী রেখেই নীরবে পালন করা হলো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে অন্যতম একটি দিন স্বাধীনতা দিবস। সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায় দিনটি। স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের সূচনার এই সময়টি জাতি আবেগের সঙ্গে স্মরণ করে। কিন্তু এবার এমন এক সময়ে ৪৯তম স্বাধীনতা দিবস সামনে এল, যখন নভেল করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব আক্রান্ত।  আর তাই রাষ্ট্রীয় সব কর্মসূচি আগেই বাতিল করা হয়।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। জাতির জনকের নির্দেশিত পথ ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যায় প্রবাসী সরকার। নয়মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শহীদ হন ৩০ লাখ মানুষ, ২ লাখ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারান। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামে, তবে এবার একেবারে নিস্তব্ধ ছিল জাতীয় স্মৃতিসৌধ। সরজমিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান পরিবেশ বিরাজ করছে। অন্যান্য বছর যেখানে মানুষের জন্য হাঁটা পর্যন্ত দায় ছিল, সেখানে এবার ছিল জনশূন্য পরিবেশ। স্মৃতিসৌধের প্রধান প্রবেশপথ তালা দেওয়া ও দ্বিতীয় পথে এক নিরাপত্তাকর্মী বসে অলস সময় পার করছেন। বন্ধ রয়েছে স্মৃতিসৌধের ফোয়ারাও। প্রধান বেদিতে ছিল না কোন ফুল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের জন্য গত ১৬ মার্চ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে গত ১৭ মার্চ স্মৃতিসৌধ ধোয়া-মোছা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছিল। কিন্তু ২১ মার্চ করোনা সংক্রমণ রোধে জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এ কারণে স্মৃতিসৌধের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রতিবছর প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এরপর থেকে সর্বস্তরের মানুষ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অনুষ্ঠান জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এবছর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনার মহামারির কারণে এ কর্মসূচিটি বাতিল করা হয়েছে।

তবে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে খুবই সীমিত পরিসরে ও সংক্ষিপ্ত আয়োজনে পালন করা হয় স্বাধীনতা দিবস। প্রশাসনের কর্মকর্তারা সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তাদের অনেকেই বলেছেন, এমনভাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের নজির এর আগে ছিল না। দিবসটি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। টেলিভিশন ও বেতারেও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়।

বাধ্য হয়ে সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে, তবে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি মানুষের হৃদয়ের যে শ্রদ্ধা তাতে একটুও ঘাটতি পড়েনি। ফুলের পাহাড় নয়, হৃদয় নিংড়ে ভালবাসা আর শ্রদ্ধা উজাড় করে দিয়েছে দেশের মানুষ।

 
Electronic Paper