করোনা মোকাবেলায়
চীন থেকে এল বিপুল মেডিকেল সরঞ্জাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২০
করোনাভাইরাস শনাক্তে চীন থেকে কিট, পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) ও থার্মোমিটারসহ নানা রকম মেডিকেল সরঞ্জাম ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। চীন থেকে আসা এই দ্বিতীয় চালানে রয়েছে- ১০ হাজার টেস্ট কিট, ১০ হাজার পিপিই ও ১ হাজার থার্মোমিটার।
স্বাধীনতা দিবসের দিন বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সেগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
বিমানবন্দরে মেডিকেল সরঞ্জামগুলো গ্রহণ করে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) জনসংযোগ শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মেডিকেল সরঞ্জাম সহায়তা দিচ্ছে চীন সরকার। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও দ্বিতীয়বারের মতো এসব টেস্ট কিট, পিপিই ও থার্মোমিটার পাঠিয়েছে তারা।
এর আগে প্রথম দফায় বাংলাদেশকে দুই হাজার কিট ও চিকিৎসাসামগ্রী দিয়েছিল চীন।
এর আগে ভারত সরকার ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক ও ১৫ হাজার হেড কভার বাংলাদেশকে দিয়েছে। বুধবার ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে এই সহায়তা হস্তান্তর করেন।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৫ লাখ এবং মারা গেছেন ২১ হাজার ৩৩৬ জন মানুষ। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক লাখ ১৪ হাজার ৭৭৯ জন।
বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন পাঁচজন।
করোনাভাইরাস এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে গোটা ইউরোপে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইতালিতে। টানা এক সপ্তাহ ধরে সেখানে গড়ে ছয়শর বেশি করে মানুষ মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালগুলোর মর্গে লাশ রাখার জায়গা নেই। সেনাবাহিনীর ট্রাকে করে দূর-দূরান্তের করবস্থানে নিয়ে গণহারে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেয়া হচ্ছে।
এ মহামারী পুরো বিশ্বকেই যেন স্তব্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ দেশেই রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত, শপিংমল-মার্কেট, রেস্তোরাঁ-বার ফাঁকা। যেন সব ভুতুড়ে নগরী, যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থা চলছে। সবার মধ্যে ভয়, আতঙ্ক আর আশঙ্কা।
করোনার বিস্তাররোধে দেশের সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। চীন ও যুক্তরাজ্য ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আদালতও। এমনকি একাধিক এলাকাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য দেশের সব জেলায় মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।