পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের হাতে জিম্মি যাত্রীরা
আবুল হাসান, মোংলা
🕐 ৮:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০২০
মোংলা বন্দর থেকে বিভাগীয় শহর খুলনা অথবা জেলা শহর বাগেরহাটসহ সড়ক পথে দেশের অন্যান্য জায়গায় যারা প্রতিনিয়ত এ মহাসড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী বাসে চলাচল করে থাকেন তাদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পড়েছে।
মোংলা থেকে খুলনা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে প্রায় তিন ঘণ্টায়। এ বিষয়ে এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ পরিবহন মালিকও শ্রমিকদের হাতে যেন জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
সম্প্রতি মোংলার বাঁধন যুব ও ক্রীড়া সংঘ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নানের কাছে খুলনা-মোংলা মহাসড়কে পরিবহন ব্যবস্থার ভোগান্তি দূরীকরণ প্রসঙ্গে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ প্রসঙ্গে ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে মোট ৭টি দাবি জানানো হয়। যা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি। এর আগে এ রুটে বহুবার সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকের প্রাণহানি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব প্রতিরোধে তেমন কার্যকরী ভূমিকা নেয়নি বলেও অভিযোগ।
এদিকে, মোংলা-সোনাডাঙ্গা ও মোংলা-রুপসা রুটে প্রতিনিয়ত সরাসরি এক্সপ্রেস সার্ভিস গাড়ি চলছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া মোংলা-বাগেরহাট ও রুপসা রুটেও লোকাল গাড়ি চলে আসছে। অপরদিকে মোংলা থেকে চট্রগ্রাম ও উত্তরবঙ্গ গাড়ি মিলিয়ে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত প্রায় ৬০-৭০ টি গাড়ি প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। এসব রুটের প্রতিটি গাড়িরই একই অবস্থা। ডাইরেক্ট বা এক্সপ্রেস সার্ভিসের গাড়িতে প্রতিটি স্টপজেই যাত্রী ওঠানো ও নামানো হয়। এছাড়া মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে।
যাত্রীরা মাঝে মধ্যে মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ দিলে তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা কার্যকরী হয়না বলে সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া খানাখন্দ ও রাস্তা ব্যস্ত থাকায় গাড়ি যাতায়াতে সময় বেশি লাগছে। অপরদিকে এ মহাসড়কে বড় বড় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করাতেও গাড়ির গতি কমিয়ে চালাতে হয় ড্রাইভারদের। অবশ্য মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তারা কোন অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেন।
খুলনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির কর্মচারী (ষ্টাটার) আ. জলিল বলেন, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর গাড়ি এ রুটে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। অতিরিক্ত পণ্য ট্রাকে বোঝাই করে ধারণ ক্ষমতার বাইরে এ রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলো রাস্তার বড় বড় ক্ষতি সাধন করছে। এসব প্রভাবশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ট্রাক ও লরী অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করছে বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বাগেরহাট আন্তঃজেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আ. বাকি বলেন, মাঝে মধ্যে শ্রমিকরা যাত্রীদের সঙ্গে দূরব্যবহার করে থাকেন এটা সত্যি। তবে অভিযোগ আসলে আমরা ব্যবস্থা নেই। ইদানিং বাসের মধ্যে গাদাগাদি করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।